Monday, February 17, 2014

অবৈধ সিম কার্ডের সংযোগ বিচ্ছিন্নের নির্দেশ

আগামী তিন মাসের মধ্যে সব অবৈধ সিম কার্ডের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে মুঠোফোন অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মুঠোফোন অপারেটরদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। 

বিশেষ করে বছরে যারা একবার সিম ব্যবহার করেন, দেশে ব্যবহার না করে বিদেশে গিয়ে রোমিং করে ব্যবহার করেন এবং যেসব সিম ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্যতা দেখা যায়, সেসব সিমের সংযোগও বাতিলের কথা বলা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এখন থেকে যেকোনো মুঠোফোন ব্যবহারকারীর পরিচয় জানতে চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে মুঠোফোন কোম্পানিকে জানাতে হবে। যদি না জানাতে পারে, তবে ওই কোম্পানিগুলো দায়ী থাকবে।

সংশ্লিষ্ট ওই সূত্র আরো জানায়, সিম কার্ড বন্ধ করে দেয়ার আগে সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি ও খুদে বার্তা পাঠানো হবে ব্যবহারকারীদের। রেজিস্ট্রেশন করার সময় অবশ্যই পুরো ফরম পূরণ করতে হবে। শুধু নামের ঘর পূরণ করে ফরম বিক্রি করা চলবে না। চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট বা ভোটার আইডি কার্ড বা যেকোনো একটি তথ্য দিতে হবে, যা দিয়ে গ্রাহককে শনাক্ত করা যেতে পারে।

কর্মকর্তারা জানান, সিম কেনার তথ্য খতিয়ে দেখতে গিয়ে নানা অসংগতি চোখে পড়ে। অনেক সময় দেখা যায় এক তথ্যের সঙ্গে আরেক তথ্যের মিল নেই। এভাবে সিম বিক্রির ফলে অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে। সিম কার্ড বিক্রির সময় গ্রাহক তথ্য নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র সার্ভারে তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ দেয়া হবে অপারেটরদের।

স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘অবৈধ সিম র্কাড ব্যবহার করে চাঁদা চেয়ে হুমকি দেয়াসহ বড় বড় অপরাধ করা হচ্ছে। এজন্যই অবৈধ সব সিম কার্ড বাতিল করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অবৈধভাবে সিম কার্ড বিক্রি করলে ওই দোকানদার বা ডিস্ট্রিবিউটরের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ ব্যবহার ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য ছয়টি মুঠোফোন অপারেটরের ৭১ লাখ সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে। সম্প্রতি একটি সেমিনারে মুঠোফোন অপারেটরদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলালিংক ২১ লাখ, গ্রামীণফোন ১৪ লাখ, এয়ারটেল ১৩ লাখ ও টেলিটকের আট লাখ সিম কার্ড বন্ধ করেছে অপারেটররা।

সেমিনারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান জানান, বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের জন্য ৭১ লাখ সিম কার্ড সম্প্রতি বন্ধ করা হয়েছে।

মোবাইল অপারেটরদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ৯৮ শতাংশ সিম কার্ড অবৈধ কল টারমিনেশনের জন্য বন্ধ করা হলেও অবৈধ কল টারমিনেশনের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের ৯০ শতাংশই ধরাছোঁয়ার বাইরে। যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে বিটিআরসি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়। অবৈধ কল টারমিনেশনের অভিযোগে গত চার বছরে ১৪৯ জন আটক হলেও তারা প্রত্যেকেই ছাড়া পেয়েছেন।