Wednesday, November 5, 2014

পাইকগাছায় প্রতিদ্বন্দ্বী চক্রের ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে এমপি নূরুল হকের সংবাদ সম্মেলন

পাইকগাছায় আ’লীগ নেতা গাজী মোহাম্মদ আলী ও প্রতিদ্বন্দ্বী চক্রের ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন খুলনা-৬ পাইকগাছা কয়রার এমপি এ্যাড. শেখ মোঃ নূরুল হক। বুধবার সকালে পৌর সদরস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমপি নূরুল হক বলেন, সংসদ সদস্য হিসাবে বিগত ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল মেয়াদে নির্বাচনী এলাকার অভূতপূর্ব উন্নয়ন করা হয়। এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে বর্তমান মেয়াদেও যাতে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে না পারি এজন্য প্রতিদ্বন্দ্বী চক্ররা আমার অনুপস্থিতির সুযোগে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে চরম মিথ্যাচার করে চলেছে।

তিনি বলেন গত ২৬ অক্টোবর উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক গাজী মোহাম্মদ আলী নেতাকর্মীদের সাথে আলোচনা ছাড়াই মনগড়া, গঠনতন্ত্র পরিপন্থী, অগ্রহনযোগ্য আহবায়ক কমিটির সভা আহবান করেন। সভায় উপস্থিত ত্যাগী ও জৈষ্ঠ্য ও পদবঞ্চিত নেতৃবৃন্দ আহবায়কের নিকট কমিটি থেকে বাদ দেয়ার কারন জানতে চাইলে গাজী মোহাম্মদ আলী ও মোঃ রশীদুজ্জামান ঐদ্ধত্বপূর্ণ আচারণ করলে নেতাকর্মীরা তাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়।

এসময় গাজী মোহাম্মদ আলী কমিটিতে থাকবো না মর্মে লিখিতভাবে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। এরপর ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় কিছু নেতাকর্মী লাঠি, সোটা নিয়ে মিছিল আকারে এসে তৃনমূল নেতাকর্মীদের মারপিট করে। এসময় আমি ও আমার বড় পুত্র মনিরুল ইসলাম নিজ গাড়িতে করে গাজী মোহাম্মদ আলীকে নিরাপদ স্থানে পৌছে দেই।

পরিস্থিতি শান্ত হলে এদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমি ও আমার পুত্র জরুরী চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতের কোলকাতায় যাই। চিকিৎসা শেষে ১ নভেম্বর খুলনায় ফিরে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত বানোয়াট, মিথ্যা খবর ও আহবায়কের কথিত সংবাদ সম্মেলন দেখে বিষ্মিত হই।

আ’লীগের কথিত আহবায়ক, সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাড. সোহরাব আলী সানা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা একত্রিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মনগড়া, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনয়নের চেষ্ঠা করছেন। অথচ ২০০৯ সালে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে নির্বাচনী এলাকায় তৃনমূলের সমর্থন সংগ্রহকালে আমাদের অনুপস্থিতিতে আমি ৩৮৭ এবং সোহরাব আলী সানা ৫৭ কাউন্সিলের সমর্থন পান।

সোহরাব আলী সানা নির্বাচিত হওয়ার গত ৫ বছরে তার কাজে আমার পক্ষের কোন নেতাকর্মী বাঁধা সৃষ্টি না করলেও বর্তমানে আমি যাতে সুষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারি সেজন্য আজ তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে মিথ্যার উপর নির্ভর করে আমাদের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাহত করতে একের পর এক সাংবাদিক সম্মেলনের নামে মিথ্যাচার করছেন।

জেলা নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন বিগত ৬/৭ বছর জেলা আ’লীগের মিটিং সিটিং দূরে থাক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত ছিল না। এমনই অবস্থার প্রেক্ষাপটে গত ৩ আগষ্ট হঠাৎ করে জেলা কার্যনির্বাহী কমিটির সভা আহবান করা হয়। সভায় গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত না নিয়ে শুধুমাত্র তেরখাদা ও পাইকগাছা উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত করে শরফুদ্দিন বাচ্চু ও গাজী মোহাম্মদ আলীকে আহবায়কের দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

পরে আহবায়ক গাজী মোহাম্মদ আলী পৌর বাজারস্থ সবুর হোটেলে স্থায়ীভাবে রুমভাড়া করে সোহরাব আলী গংদের সাথে মিলে সদস্য সংগ্রহের নামে বানিজ্য শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস পালনের সুযোগ পেয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে মোটা অংকের চাঁদা তোলেন। অথচ আমার সাথে আলোচনা না করলেও এ অনুষ্ঠানে আমি ৩০ হাজার ও ৩০ শে আগষ্ট বিশেষ বর্ধিত সভায় ২৫ হাজার টাকা প্রদান করি।

প্রদানকৃত টাকা কাঙ্গালীভোজে খরচ না করে প্রায় ১৫/২০ হাজার টাকা তিনি উদবৃত্ত রেখে দেন। বিশেষ বর্ধিত সভায় জেলা নেতৃবৃন্দ কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে অনেক ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করে ইচ্ছামত তাদের পছন্দনীয় লোককে আহবায়ক পদে মনোনয়ন দেন।

তিনি বলেন সাবেক সংসদ সদস্য যাদেরকে নিয়ে বিগত দিনে ঘের দেখল, ঘাট দখল, টিআর কাবিখার খাদ্যশষ্য ভাগাভাগি বিক্রয়ের মহাউৎসবে লিপ্ত ছিলেন তাদেরকেই পুনরায় এডহক কমিটিতে অন্তভূক্ত করার মাধ্যমে আওয়ামী রাজনীতিকে কলুষিত করেছে।

গত ২৬ অক্টোবর কোন সভা না হওয়া সত্ত্বেও হরিঢালী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার গোলাম মোস্তফাকে বহিষ্কার করা সম্পূর্ণ বানোয়াট ভিত্তিহীন মনগড়া উল্লেখ করে এমপি হক বলেন, গাজী মোহাম্মাদ আলী এলাকায় না এসে খুলনা সদরে বসে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দল চালানোর কৌশল আয়ত্ত করছেন যা আদৌ কাম্য ও গনতান্ত্রিক নয়।

সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি গাজী মোহাম্মদ আলীকে ষড়যন্ত্র পরিহার করে সরদার গোলাম মোস্তফার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার ও শান্তিপূর্ণভাবে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের আহবান জানান। আ’লীগের গণ ঐক্য কমিটি গঠনের মাধ্যমে ভবিষ্যতের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে বলে তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এসময় দলীয় নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।