Tuesday, September 10, 2013

মোবাইলে ভূয়া এসএমএস থেকে খুবই সাবধান

খুলনার নিরালা আবাসিক এলাকার ব্যবসায়ী বুলবুল আহমেদ। বিকালে তার বাবার নম্বর থেকে ম্যাসেজ আসলো ৫ লাখ টাকা নিয়ে রয়েল মোড়ে আসার জন্য। বুলবুল কি মনে করে তার বাবাকে ফোন দিয়ে দেখলেন পুরো ঘটনাটিই সাজানো। তার বাবা তাকে কোনো এসএমএস পাঠাননি। ইন্টারনেটে ফ্রি এসএমএস সাইট ব্যবহার করে কাজটি করেছে প্রতারক চক্র।

গত সপ্তাহে নগরীর ডায়াবেটিস সেন্টারে চিকিৎসক ডা. এম.বি জামানের মোবাইলে তার তার খালাতো ভাই সিটি গার্লস কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক মোঃ আজিজুল হকের মোবাইল ফোন নম্বর থেকে একটি ম্যাসেজ আসে। ম্যাসেজে আজিজুলকে বিকাশ করে ৫ হাজার টাকা পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়। বিপদে পড়েছে জেনে ডা. জামান ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। এরপর ফোন করে জানতে পারেন আজিজুল কোনো এসএমএস পাঠাননি। একটি প্রতারক চক্র ইন্টারনেটের সেই ফ্রি সাইটটি ব্যবহার করে ভাইয়ের নম্বর দিয়ে এসএমএসটি পাঠিয়েছে।

শুধু বুলবুল বা ডা. জামানই নয়; এসএমএসের মাধ্যমে এমন প্রতারণা ঘটছে অহরহ। খুব অল্প সময়েই তা’ প্রকাশ পাচ্ছে। মোবাইলে প্রিয়জনের নাম্বার ব্যবহার করে এসএমএস চলে যাচ্ছে অপর জনের কাছে। সেই এসএমএস কারও কাছে চাওয়া হচ্ছে টাকা। কাউকে আবার বলা হচ্ছে নির্দিষ্ট স্থানে দেখা করতে। এতে করে অপহরণ, মেয়েদের লাঞ্ছনা এমনকি জীবনহানিরও শংকা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মত আইন-শৃংখলা নাজুক পরিস্থিতির দেশে এটি বিপজ্জনক রূপ দেয়ার আগেই বন্ধ করা প্রয়োজন। এজন্য বিটিআরসিকে অবিলম্বে ইন্টারনেটে ফ্রি এসএমএসের সাইটটি বন্ধ করে দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন সুধীমহল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশে ইন্টারনেট সম্পর্কে খুব অল্প সংখ্যক মানুষেরই ধারণা রয়েছে। এজন্য পরিচিত নম্বর থেকে এসএমএস আসলে সবাই সহজভাবেই সাড়া দেয়। এই উপায়ে আপনার নম্বর ব্যবহার করে আপনার পরিচিত কাউকে বিপদে ফেলা হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায়, বাবা বা ভাইয়ের নম্বর থেকে মেয়ে বা বোনের নম্বরে এসএমএস করে তাকে কোথাও আসতে বলা হল। সেখানে গিয়ে মেয়েটি লাঞ্ছিত হলো। অথবা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে তার নম্বর থেকে অন্যদের এসএমএসে হুমকি বা চাঁদা দাবির ঘটনাও ঘটছে বিভিন্ন স্থানে। এজন্য যে কোনো ধরনের এসএমএস আসার আগে অবশ্যই তা’ যাচাই-বাছাই করে নেয়া উচিত।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, তথ্য প্রযুক্তির যুগে ইন্টারনেটের খারাপ বিষয়গুলো ব্যবহার করে মানুষকে প্রতারিত করা দারুণ উদ্বেগের বিষয়। যে কোনো বড় ধরনের অঘটনের আগেই আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ইন্টারনেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিকে এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই সাথে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন তারা।