Sunday, August 24, 2014

জীবন সংগ্রামে হার মানেনি কপিলমুনির প্রতিবন্ধী সুজন

জীবন সংগ্রামে হার মানেনি প্রতিবন্ধী সুজন। প্রতিবন্ধীর অভিশাপ থেকে কিছুটা হলেও নিজেকে মুক্ত করতে অবশেষে ইলেকট্রনিকের কাজ বেছে নিয়েছে ৩০ বছর বয়সী সুজন অরফে পচা।

জানাযায়, পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির পার্শ্ববর্তী হরিঢালী ইউনিয়নের মামুদকাটী গ্রামের দীলিপ দত্তের ছোট ছেলে সুজন দত্ত পচা। একেবারে ঠিকঠাক জানা না গেলেও ১৯৮৪ সালের কোন এক সময় মাতা গীতা রানী দত্ত’র কোল জুড়ে আসে সুজন।

প্রতিবন্ধী হয়ে সে জন্ম না নিলেও বয়স যখন ৬ মাস তখন পোলিও রোগে অক্রান্ত হওয়ায় তার ২ টি পা বিকলঙ্গ হয়ে যায়। প্রায়ই রোগে আক্রান্ত হওয়ায় পিতামাতা তার নাম দেন পচা। তার পা’দুটি বিকলঙ্গ হওয়ায় গ্রামের অন্য ছেলে মেয়ের মত হতভাগ্য পচার বেড়ে ওঠা সম্ভাব হয়নি। সারাক্ষণ তার বাড়ীর অঙ্গিনায় কোন রকমে ঘুরে ফিরে তার বেড়ে ওঠা।

অতি কষ্টে লেখা পড়া হয় ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত। ব্যক্তি জীবনে ২০০৯ সালে বিবাহ করে সে, তার সংসার জুড়ে আসে এক ছেলে এক মেয়ে। শারীরিকভাবে পচা সামর্থবান না হলেও মানষিকভাবে অত্যন্ত শক্তিশালী, তার ভেতর রয়েছে ইচ্ছা শক্তি, রয়েছে মেধা শক্তিও। সে যেন জীবন সংগ্রামে এক অকুতোভয় বীর। সে সিদ্ধান্ত নিল আর জড়ো পদার্থের ন্যায় জীবন যাপন নয়। সে কর্মের মধ্য দিয়ে অর্থ উপার্জন করে জড়ো জীবনকে বিসর্জন দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায়। 


আর তাইতো শুরু হলো কর্ম জীবনের শুভযাত্রা। বাড়ীর আঙ্গিনায় রাস্তার ধারেই ছোট একটি কুড়ে ঘর বেঁধে মুদি দোকান দেয় সে। সেখানে বেশ কয়েক বছর ব্যবসা পরিচালনা করে, পাশাপাশি নিজে নিজেই ইলেকট্রনিক সামগ্রি মেরামত করতে করতে এক পর্যায়ে সে ইলেকট্রনিক মিস্ত্রি হয়ে যায়। টর্চ লাইট থেকে শুরু করে টেলিভিশন মেরামত তার কাছে খুব সহজ কাজে পরিনত হয়। এরপর পচা বাড়ির আঙ্গিনা ছেড়ে উঠে আসে মামুদকাটী বাজারে। সেখানে বর্তমানে একটি ভাড়া দোকানে তার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

সুজন দত্ত পচা বলেন, পঙ্গুত্ব আর প্রতিবন্ধী জীবন কারো কাঙ্খিত নয়। যদিও আমার জীবনের সাথে সেটা জড়িয়ে গেছে। প্রতিবন্ধী জীবনটাকে পুজি করে অভিশাপ্ত অন্ধকার গহীনে হারিয়ে যেতে চাই না, তাই তো আমার এজীবন সংগ্রাম। সকলের কাছে সহযোগীতা নয় শুধু আর্শির্বাদ চাই।