Saturday, September 6, 2014

পাইকগাছায় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মন্দির উন্নয়নের চাল আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

পাইকগাছা থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সঞ্জয় মজুমদার ও তার এক সহযোগীর বিরুদ্ধে এবার উপজেলার উলুডাঙ্গা-রহিমপুর সার্বজনীন পূজা মন্দির উন্নয়নে বরাদ্দকৃত ৩ টন চাল-গম আত্মসাত ও তার প্রতিবাদ করায় হত্যা এবং আসন্ন দুর্গা পূজা করতে না দেয়ার হুমকির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঐ মন্দির কমিটির সভাপতি ও স্কুল শিক্ষক রনজিত কুমার নন্দি স্থানীয় কপিলমুনি প্রেস ক্লাবে সনাতন ধর্মাবলম্বী গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপরোক্ত অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে জানা যায়, পাইকগাছা উপজেলার হরিঢালীর উলুডাঙ্গা গ্রামের উজ্জ্বল মজুমদারের ছেলে পাইকগাছা উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সঞ্জয় মজুমদার এবং একই গ্রামের মৃত ভোলা নাথ দে’র ছেলে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি জয়দেব দে পর্যায়ক্রমে সেখানকার উলুডাঙ্গা-রহিমপুর সার্বজনীন পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি থাকাকালীন জরাজীর্ণ মন্দিরের উন্নয়নকল্পে গত ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০১০, ১৮ জুন ২০১২ ও ১২ মার্চ ২০১৩ যথাক্রমে ৩ টন সরকারি চাল ও গম বরাদ্দ নিয়ে কোন প্রকার কাজ না করে সমুদয় অর্থ আত্মসাৎ করেন।

বিষয়টি মন্দিরের বর্তমান কমিটি জানতে পেরে কয়েক বার মাসিক সভায় তাদের নিকট জানতে চাইলে বিষয়টি তারা জানাননি। এসময় বরাদ্দের ডিও লেটার গুলি দেখালে তারা সেগুলো ভূয়া বলে মন্তব্য করেন এমন কি নেতৃবৃন্দের উপর আকষ্কিক হামলা ও কয়েক জনকে মন্দির অভ্যন্তরে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

এনিয়ে পরে এক জরুরী সভায় থানা ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে অভিযুক্তদের উল্লেখিত ৩ টন খাদ্যের টাকায় মন্দির উন্নয়নের কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তারা কাজ না করায় তাদের কাছে জানতে চাইলে সঞ্জয় মজুমদার ও জয়দেব দে স্থানীয় রাজিব মজুমদার ওরফে কানু, শ্যামল মজুমদার ওরফে পীর, জয়প্রকাশ দে ওরফে রাজু, কোমল মজুমদার’সহ অজ্ঞাত বহিরাগতদের নিয়ে নিরীহ গ্রামবাসীর উপর অতর্কিত সশস্ত্র হামলা করেন। এসময় নিরস্ত্র গ্রামবাসী কোন রকম প্রাণ নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানালেও কাজ হয়নি।

সর্বশেষ আসন্ন দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে উদযাপন পরিষদ মন্ডপে প্রতীমা তৈরীর কাজ শুরু করলেও এক অজানা আশংকায় দিনাতিপাত করছে। লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয় যে, তারা পুনরায় সংঘবদ্ধ হয়ে গত ৫ আগস্ট রাতের অন্ধকারে মন্ডপ চত্ত্বরে মিটিং করেছে যে, যেকোন ভাবেই তারা নতুন কমিটি দিয়ে পূজা বাস্তবায়ন করতে দেবেনা। এমন কি তারা সেখানে চিৎকার দিয়ে সকলকে জানানদেয় তাদেরকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে কচুকাটা করা হবে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হলে তিনি গত ৩ সেপ্টেম্বর পাইকগাছা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেবাশীষ সরদারকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

বর্তমানে সঞ্জয়-জয়দেব গংদের অব্যাহত হুমকিতে রীতিমত তটস্থ হয়ে পড়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঐ এলাকার মানুষরা এমনটি অভিযোগ করেছেন খোদ ঐ মন্দির কমিটির সভাপতি।