আইলার পর বেঁচে থাকাটা যেন ছিল কঠিন। লবনের কারণে কোনও ফসলই হত না জমিতে।
আর তাই জীবিকার জন্য বছরে ১১ মাসই সুন্দরবনে থাকতে হত। ছিল জীবনের নানাবিধ
ঝুঁকি। সব কিছুকে পাল্টে দিয়েছে চাষাবাদের বহুধারার সংযোজন।
একই জমিতে ৩ ধরনের অর্থনৈতিক তৎপরতায় এখন আর সুন্দরবনে যাওয়ার প্রয়োজন হয়
না- কথাগুলো একটানেই বললেন কয়রার উত্তরবেদকাশি গ্রামের আইয়ুব আলী।
তিনি জানান, এখন তার সন্তানেরা স্কুলে যায়। সংসারে নেই কষ্টকর দিনগুলো।
আইয়ুব আলীর মত কয়রার আরও ৫শ’ জনগোষ্ঠী এখন বনের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে
ফেলেছে। যারা নিজ জমিতে চাষাবাদ করে। এক জমি থেকেই পায় ধান, মাছ ও নানা
ধরনের সবজি।
কয়রা সদরের আব্দুর রহমানও সুন্দরবনে যেতেন নিয়মিত। এখন সংসারের ৪জন মিলে ৪ বিঘা জমির নিয়মিত কাজই শেষ করতে পারেন না। সুন্দরবনে যাওয়ার প্রয়োজনীতা অনুভব করেন না। নিজেরাই বিকল্প কর্মসংস্থান করে ফেলেছেন।
আগে কয়রার ৩ হাজার জনগোষ্ঠী নিয়মিত বনে যেত। সেখানে তারা দীর্ঘদিন অবস্থান করত। আহরিত মাছ, কাকড়া পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠাত। বন বিভাগ ৫০ ভাগ পাশ-পারিমট দেওয়া বন্ধ করায় জেলেরা বিপদে পড়েন। পাশ ছাড়া তারা বনে যেতে আগ্রহ হারান। এ অবস্থায় বিকল্প কর্মসংস্থান করতে থাকেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে ১২টি এনজিওর তৎপরতায় এ সব পথহারা মানুষ নতুন পথের সন্ধান পান। বেঁচে থাকার নতুন অবলম্বন হিসেবে কৃষিকে আকড়ে ধরেন। তারা এখন কম পরিশ্রমেই প্রয়োজনীয় অর্থ উপার্জন করছেন।
জাগ্রত যুব সংঘ (জেজেএস) নামে একটি এনজিওর পরিবর্তন প্রকল্পের আওতায় এমন ভাগ্য বদলেছে কয়রার সহস্রাধিক লোকের। যাদের একটি বড় অংশই সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। অসহায় ও দরিদ্র মানুষেরা এখন নিজেরাই স্বাবলম্বী।
ইয়াসিন আলী নামে এক কৃষক জানান, তিনি পরিবর্তন প্রকল্প থেকে তিনি ঘের তৈরী, ধান ও সবজি বীজ কেনা এবং মাছের পোনা কেনার জন্য অফেরতযোগ্য অর্থ পেয়েছেন। তাদের শর্ত রয়েছে যে কোনও মূল্যেই হোক এই চাষাবাদ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা। এ কাজের মাধ্যমে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরছে। সবজি বিক্রির অর্থ দিয়ে সংসারের নিয়মিত খরচ মেটানো যাচ্ছে সহজেই। মাছ ও ধানের অর্থ মজুদ থাকছে। তিনি বলেন, ‘আগে আমন ধান পাওয়া যেত। নতুন প্রক্রিয়ায় চাষ করার ফলে আউশ ধানও কেটেছি। আবার ওই জমিতেই আমন রোপন করবো। ‘
সরেজমিন দেখা গেছে, আগে যেখানে আমন ধানই চাষ করা দুরুহ ছিল, এখন সেই জমিতে আউশ ও বোরো চাষ হচ্ছে। ধানের পাশাপাশি গলদা ও হরিণা চিংড়ি, রুই, কাতলা এবং ঢেড়স, শষা, ঝিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, করলা, আখ, কচু শাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ হচ্ছে। অনেকেই বাড়ির আঙ্গীনায় নানা ধরনের সবজি চাষ করছেন। আইলা ক্ষতিগ্রস্ত হায়দার শেখ উঠানে সবজি বাগান তৈরী করেছেন। বিভিন্ন প্রকারের সবজি বিক্রির অর্থ দিয়ে সংসারের নিয়মিত খরচ উঠে আসছে। আউশ ধান কাটা শেষে এখন আমন ধান লাগিয়েছেন। শিগগিরই মাছ বিক্রি শুরু হবে।
কয়রা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলায় আবাদযোগ্য ১৫ হাজার হেক্টর জমি আইলার পর লবনাক্ততার কারণে পতিত অবস্থায় ছিল। বর্তমানে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়। লবণের কারণে বোরো চাষ কমছে। পাশাপাশি ঘেরের আইলে সবজি চাষ বেশ জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে।‘
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হাসান বলেন, ‘দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান, সচেতনতা সৃষ্টি, বীজ ও সার সরবরাহ, সারের ভর্তুকি প্রদান করাসহ নানাভাবে সহযোগিতা করা হয়। এ জন্য ১২টি এনজিও‘র সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে।‘
কয়রা উপজেলা জাগ্রত যুব সংঘের পরিবর্তন প্রকল্পের ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম জানান , প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট ঝুঁকি হ্রাস ও অভিযোজনের লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন। দরিদ্র পরিবারকে অর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে ১৭ বিঘা জমিতে ৭টি পাইলট প্রকল্প করছেন। এ প্রকল্পের সফলতা দেখে আরও ১ হাজার ৮২ জন উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তারাও নিজেদের আঙ্গিনাসহ পরিত্যাক্ত জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। ছোট পুকুর কেটে মাছ ছাড়ছেন।
কয়রা সদরের আব্দুর রহমানও সুন্দরবনে যেতেন নিয়মিত। এখন সংসারের ৪জন মিলে ৪ বিঘা জমির নিয়মিত কাজই শেষ করতে পারেন না। সুন্দরবনে যাওয়ার প্রয়োজনীতা অনুভব করেন না। নিজেরাই বিকল্প কর্মসংস্থান করে ফেলেছেন।
আগে কয়রার ৩ হাজার জনগোষ্ঠী নিয়মিত বনে যেত। সেখানে তারা দীর্ঘদিন অবস্থান করত। আহরিত মাছ, কাকড়া পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠাত। বন বিভাগ ৫০ ভাগ পাশ-পারিমট দেওয়া বন্ধ করায় জেলেরা বিপদে পড়েন। পাশ ছাড়া তারা বনে যেতে আগ্রহ হারান। এ অবস্থায় বিকল্প কর্মসংস্থান করতে থাকেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে ১২টি এনজিওর তৎপরতায় এ সব পথহারা মানুষ নতুন পথের সন্ধান পান। বেঁচে থাকার নতুন অবলম্বন হিসেবে কৃষিকে আকড়ে ধরেন। তারা এখন কম পরিশ্রমেই প্রয়োজনীয় অর্থ উপার্জন করছেন।
জাগ্রত যুব সংঘ (জেজেএস) নামে একটি এনজিওর পরিবর্তন প্রকল্পের আওতায় এমন ভাগ্য বদলেছে কয়রার সহস্রাধিক লোকের। যাদের একটি বড় অংশই সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল ছিল। অসহায় ও দরিদ্র মানুষেরা এখন নিজেরাই স্বাবলম্বী।
ইয়াসিন আলী নামে এক কৃষক জানান, তিনি পরিবর্তন প্রকল্প থেকে তিনি ঘের তৈরী, ধান ও সবজি বীজ কেনা এবং মাছের পোনা কেনার জন্য অফেরতযোগ্য অর্থ পেয়েছেন। তাদের শর্ত রয়েছে যে কোনও মূল্যেই হোক এই চাষাবাদ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা। এ কাজের মাধ্যমে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরছে। সবজি বিক্রির অর্থ দিয়ে সংসারের নিয়মিত খরচ মেটানো যাচ্ছে সহজেই। মাছ ও ধানের অর্থ মজুদ থাকছে। তিনি বলেন, ‘আগে আমন ধান পাওয়া যেত। নতুন প্রক্রিয়ায় চাষ করার ফলে আউশ ধানও কেটেছি। আবার ওই জমিতেই আমন রোপন করবো। ‘
সরেজমিন দেখা গেছে, আগে যেখানে আমন ধানই চাষ করা দুরুহ ছিল, এখন সেই জমিতে আউশ ও বোরো চাষ হচ্ছে। ধানের পাশাপাশি গলদা ও হরিণা চিংড়ি, রুই, কাতলা এবং ঢেড়স, শষা, ঝিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, করলা, আখ, কচু শাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ হচ্ছে। অনেকেই বাড়ির আঙ্গীনায় নানা ধরনের সবজি চাষ করছেন। আইলা ক্ষতিগ্রস্ত হায়দার শেখ উঠানে সবজি বাগান তৈরী করেছেন। বিভিন্ন প্রকারের সবজি বিক্রির অর্থ দিয়ে সংসারের নিয়মিত খরচ উঠে আসছে। আউশ ধান কাটা শেষে এখন আমন ধান লাগিয়েছেন। শিগগিরই মাছ বিক্রি শুরু হবে।
কয়রা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলায় আবাদযোগ্য ১৫ হাজার হেক্টর জমি আইলার পর লবনাক্ততার কারণে পতিত অবস্থায় ছিল। বর্তমানে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়। লবণের কারণে বোরো চাষ কমছে। পাশাপাশি ঘেরের আইলে সবজি চাষ বেশ জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে।‘
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হাসান বলেন, ‘দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান, সচেতনতা সৃষ্টি, বীজ ও সার সরবরাহ, সারের ভর্তুকি প্রদান করাসহ নানাভাবে সহযোগিতা করা হয়। এ জন্য ১২টি এনজিও‘র সঙ্গে উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে।‘
কয়রা উপজেলা জাগ্রত যুব সংঘের পরিবর্তন প্রকল্পের ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম জানান , প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট ঝুঁকি হ্রাস ও অভিযোজনের লক্ষ্যে তারা কাজ করছেন। দরিদ্র পরিবারকে অর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে ১৭ বিঘা জমিতে ৭টি পাইলট প্রকল্প করছেন। এ প্রকল্পের সফলতা দেখে আরও ১ হাজার ৮২ জন উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তারাও নিজেদের আঙ্গিনাসহ পরিত্যাক্ত জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। ছোট পুকুর কেটে মাছ ছাড়ছেন।