Sunday, April 12, 2015

আর্সেনিকোসিস ঝুঁকিতে পাইকগাছার ৬৭.৫% ও কয়রার ১১.৩৬% মানুষ

পাইকগাছা-কয়রা’সহ খুলনার ৩০ শতাংশ টিউবওয়েলের পানি পানের অযোগ্য


খুলনা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় সুপেয় পানির জন্য ব্যবহৃত ৩১ হাজার ১৫৪টি নলকূপের মধ্যে ৯ হাজার ১১৭টি নলকূপের পানিতে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক। এ হিসাবে জেলার প্রায় ৩০ শতাংশ টিউবওয়েলের পানিই পানের অযোগ্য। 

সর্বশেষ ২০১২ সালে চালানো ওই জরিপই প্রমাণ করে খুলনা অঞ্চলের মানুষ কতটা আর্সেনিক ঝুঁকিতে রয়েছে। সারা দেশে আশির দশকে আর্সেনিক বিষক্রিয়া নিয়ে হইচই পড়ে যায়। ওই সময়ে দেশে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কাজের হিড়িক পড়লেও বর্তমানে তা একেবারেই ঝিমিয়ে পড়েছে। এখন আর সরকারি-বেসরকারি কোনো দপ্তর খোঁজ রাখে না আর্সেনিকে আক্রান্ত মানুষদের।

খুলনা পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের তথ্যমতে, খুলনার পাইকগাছা‬ উপজেলায় মোট টিউবওয়েলের সংখ্যা ৪ হাজার ৪৪৭টি। এর মধ্যে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা ৩ হাজার ১টি। আর্সেনিকোসিস ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে পাইকগাছার ৬৭ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। 

কয়রা‬ উপজেলায় মোট টিউবওয়েলের সংখ্যা ২ হাজার ৬৩০টি। এর মধ্যে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা ২৯৮টি। এতে আর্সেনিকোসিস ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কয়রার ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ মানুষ। 

খুলনার রূপসা উপজেলায় মোট টিউবয়েলের সংখ্যা ৩ হাজার ২৯০টি। এর মধ্যে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা ২ হাজার ২৩৭টি। রূপসার ৬৮ শতাংশ মানুষ আর্সেনিকোসিস ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। 

দীঘলিয়া উপজেলায় মোট টিউবওয়েলের সংখ্যা ৩ হাজার ৮১টি। এর মধ্যে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা ৯১৪টি। দীঘলিয়ায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ২৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ মানুষ। 

ডুমুরিয়া উপজেলায় মোট টিউবওয়েলের সংখ্যা ৫ হাজার ১৪০টি। এর মধ্যে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা ১ হাজার ১৬৭টি। ডুমুরিয়ায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ২২ দশমিক ৭১ শতাংশ মানুষ। 

তেরখাদা উপজেলায় মোট টিউবওয়েলের সংখ্যা ২ হাজার ৭৫৯টি। এর মধ্যে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা ৫১৭টি। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ১৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ মানুষ। 

ফুলতলা উপজেলায় মোট টিউবওয়েলের সংখ্যা ২ হাজার ১৭১টি। এর মধ্যে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা ৩৭৬টি। এতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ১৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ মানুষ। 

দাকোপ উপজেলায় মোট হস্তচালিত টিউবওয়েলের সংখ্যা ২ হাজার ৪৭৪টি। এর মধ্যে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা ৩৩৯টি। এতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ মানুষ। 

বটিয়াঘাটা উপজেলায় মোট টিউবওয়েলের সংখ্যা ২ হাজার ৯২৫টি। এর মধ্যে আর্সেনিকযুক্ত টিউবওয়েলের সংখ্যা ১৬৮টি। এতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ মানুষ। অথচ দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় খুলনা অঞ্চলের মানুষকে আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। 

খুলনার রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা উদয় বরণ ম-ল সাংবাদিকদের জানান, রূপসা এলাকায় কোনো আর্সেনিকোসিস রোগী নেই। তার কাছে কখনো কোনো আর্সেনিকোসিস রোগী আসেননি। এ ছাড়া গত ৩ বছরে তাদের কাছে কখনো কোনো ওষুধ পৌঁছায়নি। প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ওষুধ আসেনি জানালেও বর্তমানে রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ হাজার পিস ওষুধ মজুদ রয়েছে।