Sunday, April 24, 2016

পাইকগাছা হাসপাতালে গাইনী ডাক্তার নেই, মহাবিপাকে প্রসূতি মায়েরা

পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনী ডাক্তার না থাকায় মহাবিপাকে পড়েছেন প্রসূতি মায়েরা। এছাড়াও জনবল সংকটের কারনে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যেখানে সরকার স্বাস্থ্য সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর, সেখানে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্রেফ জোড়াতালি দিয়ে চলছে। ৩১ শয্যা থাকালীনই প্রয়োজনীয় জনবল ছিল সংকট, সেই একই জনবল দিয়ে ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য সেবার মান কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে তা সহজেই অনুমান করা যায়।



হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অবকাঠামো নির্মাণের পর বিগত ২০০৯ সালের ২ ডিসেম্বর ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়। তবে অদ্যবধি প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করা হয়নি। ৩১ শয্যার জন্য ৯ জন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও আছেন মাত্র ৫ জন। তার মধ্যে ডেপুটেশনে গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুজন কুমার সরকার সাতক্ষীরা ও ডাঃ ডালিয়া আক্তার খুমেক হাসাপাতালে কর্মরত রয়েছেন। হাসপাতালে বর্তমান একজনও গাইনী ডাক্তার নেই। আবার যে তিনজন ডাক্তার হাসপাতালে রয়েছেন তার মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ ও পঃ পঃ কর্মকর্তা প্রশাসনিক কাজে সার্বক্ষণিক থাকেন ব্যস্ত।

সূত্র মতে, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) পদে একজন থাকলেও তিনি প্রেসনে ঢাকায় কর্মরত। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (প্যাথলজিস্ট) দু’টি পদের কেউ নেই দীর্ঘ বছরযাবৎ। ফলে বাধ্য হয়ে চড়ামূল্যে বাইরে থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা (টেস্ট) করাতে হচ্ছে রোগীর। সেক্ষেত্রে অসহায়-দরিদ্র রোগীরা কাহিল হয়ে পড়েন অতিরিক্ত ফি দিয়ে রোগ নির্ণয় করাতে গিয়ে। আবার অনেকে টাকার অভাবে টেস্ট না করিয়েই বাড়ি ফিরছেন। 

অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালের ডাক্তাররা বাইরের কোন না কোন প্যাথলজির সাথে (ব্যবসায়ীকভাবে) জড়িত রয়েছেন। আর সেজন্যই হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগ সচল রাখা নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারোরই। 

এদিকে ৩১ শয্যার জন্য নার্সের ১২টি পদ থাকলেও (৫০ শয্যার হাসপাতালে) রয়েছেন মাত্র ৬ জন নার্স। এর মধ্যে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে একজন এবং একজন অসুস্থ। হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ দু’টি পোস্ট হচ্ছে ফার্মাসিস্ট ও সুইপার। ফার্মাসিস্ট দু’টি পদের একজনও নেই বিগত দু’বছরেরও বেশি সময়। হাসপাতালের ফ্রি ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে অন্য একজনকে দিয়ে। আর পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ৫টি পদের বিপরীতে রয়েছে মাত্র একজন। ফলে হাসপাতাল অভ্যন্তরে দুর্গন্ধময় পরিবেশ বিরাজ করছে সারাক্ষণ। 

সূত্র জানায়, হাসপাতালে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উন্নতমানের একটি এক্সরে মেশিন থাকলেও তার সুফল পাচ্ছে না রোগীরা। এক্স-রে মেশিনটি দীর্ঘ বছর পড়ে থাকার পর ২০০৫ সালে স্থাপন করা হয়। তবে এক্স-রে মেশিন স্থাপনের পর এ পর্যন্ত (১১ বছরে) ফ্রি এক্স-রে সুবিধা পেয়েছেন মাত্র ৪০ জন রোগী। বর্তমানে হাসপাতালের এক্স-রে মেশিনটি বিকল অবস্থায় আর টেকনোলজিস্ট (রেডিওগ্রাফার) পদটিও শূন্য পড়ে রয়েছে। সবমিলিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছে না রোগীরা।

--এম,আর মন্টু, পাইকগাছা।