Wednesday, November 29, 2017

পাইকগাছায় প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় মৃতের স্বামীর সংবাদ সম্মেলন

পাইকগাছায় সার্জিক্যাল ক্লিনিকে অন্তস্বত্তা গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন মৃতের স্বামী তারক চন্দ্র মন্ডল। উপজেলার খড়িয়া ঠাকুরবাড়ীর চক গ্রামের হরিপদ চন্দ্র মন্ডলের ছেলে তারক চন্দ্র মন্ডল বুধবার সকালে পাইকগাছা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অন্তস্বত্তা স্ত্রী ভারতী রানী মন্ডলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ ও পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিককে জড়িয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানান।


তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২৫ নভেম্বর রাতে আমার স্ত্রীর পেটে ব্যথা শুরু হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা ডাঃ প্রভাত কুমার দাশকে দেখানোর জন্য পরের দিন রোববার সকালে স্ত্রীকে নিয়ে পাইকগাছায় যায়। পরে সেখানে গিয়ে জানতে পারি ডাঃ প্রভাত কুমার দাশ পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে নিজস্ব চেম্বারে অবস্থান করছেন। সকাল ৭টার দিকে ক্লিনিকস্থ চেম্বারে নিয়ে গেলে ডাক্তার দেখার পর আমার স্ত্রীকে দ্রুত খুলনায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তখন আমরা ডাক্তারকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ডাক্তার পুরনায় স্ত্রীকে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে দুপুরের দিকে স্ত্রী কিছুটা সুস্থ্য হলে সোমবার তাকে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।

এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে ডাক্তার আমার স্ত্রীকে ক্লিনিকে দেখতে পেয়ে আমাদেরকে বলেন, তোমরা এখনো রোগীকে খুলনায় নিয়ে যাওনি। তখন আমরা পরের দিন নিয়ে যাওয়ার কথা বললে ডাক্তার আমাদেরকে দ্রুত খুলনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ডাক্তারের কথা শুনে রোগীকে খুলনায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমি আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতে থাকি।

এমতবস্থায় রাত ৮টার দিকে ভাত খাওয়া শেষ করারপর স্ত্রী ভারতী রানী মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এ সময় ডাঃ প্রভাত কুমার দাশ ও এমবিবিএস ডাঃ যতীন্দ্রনাথ মন্ডল রোগীকে সুস্থ্য করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। চেষ্টার এক পর্যায়ে আমার স্ত্রী মৃত্যুবরণ করে। আমার স্ত্রীর মৃত্যুর পিছনে চিকিৎসকদের যেমন কোন গাফিলতি ছিল না। তেমনি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষও কোন দায়ি ছিল না। কারণ মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত আমার স্ত্রীকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়নি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তারক জানান, তার শ্বশুড়বাড়ীর লোকজন অসুস্থ্য থাকায় এখানে উপস্থিত হতে পারেননি। তবে সংবাদ সম্মেলনের ব্যাপারে তাদের অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সিভিল সার্জন খুলনা, এএসএম আব্দুর রাজ্জাক পুনরায় নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পাইকগাছা সার্জিক্যাল ক্লিনিক বন্ধ রাখতে নির্দেশনা প্রদান ও খুলনার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আতিয়ার রহমানকে তদন্ত কমিটির প্রধান করে খুলনা সার্জিক্যাল অফিসের ডাঃ তানিয়া ইসলাম ও পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ সুজন কুমারকে সদস্য করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটিকে ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।