Friday, November 24, 2017

পাইকগাছার সালতা নদীর তালতলা ব্রিজের অসম্পূর্ণ এ্যাপ্রোচ সড়কে জনদুর্ভোগ

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সালতা নদীতে পাইকগাছার তালতলা-মাগুরখালী ব্রিজের কাজ প্রায় এক বছর আগে শেষ হলেও এ্যাপ্রোস সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতিদিন দু’পারের হাজার হাজার মানুষকে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এক পাশে পাইকগাছা, অপর পাশে ডুমুরিয়া। মাঝ দিয়ে সীমানা নির্ধারণী সালতা নদী। বিস্তীর্ণ জনপদের হাজার হাজার মানুষ জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন পার হয় এই নদী।


তবে স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর জাইকার অর্থায়নে ঐ এলাকায় ব্রিজ নির্মাণ হলেও সুফল আসেনি। দু’পারে উর্ধ্বমুখী এ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় নদী পারাপারে সমস্যা রয়ে গেছে সেই তিমিরে। বিশেষ করে দু’পারের সাধারণ মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহন ও স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের যেন আজ আর অন্ত নেই। কোন প্রকার গাড়ি পারাপার তো দুরের কথা, সামান্য বাইসাইকেল বা মোটরসাইকেল পার করতে নেমে উঁচু করে ব্রিজে তুলতে হয়। এছাড়া রোগীবাহী বাহন পারাপারে একমাত্র ভরসা এই ব্রিজই যেন কাল হয়ে দাঁড়ায়।

দুর্ভোগের শিকার এলাকাবাসী এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারসহ সরকারের বিভাগীয় উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


সূত্র জানায়, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের তালতলা ও ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরখালী ইউনিয়নের কাঞ্চন নগর এলাকার সালতা নদীর উপর ২০১৪ সালের শেষের দিকে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন কোম্পানী জাইকার অর্থায়নে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শম্ভুক গতিতে চলমান ব্রীজের কাজ চলতি বছর কোন রকম শেষ হলেও শেষ হয়নি এর এ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ। এপর্যন্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ্যাপ্রোচ সড়কে শুধু মাত্র বালু দিয়ে ফেলে রাখায় সমস্যা বেড়েছে বহুগুণে। আর ঠিক কবে নাগাদ শেষ হবে তাও জানা নেই কারো। এমন অবস্থায় নানা আশংকায় এলাকাবাসী রীতিমত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর ধারণা, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের চরম খামখেয়ালীপনা ও সরকারের তদারকির অভাবই এর জন্য দায়ী। 

প্রসঙ্গত ব্রিজটি চালু হলে খুলনার পাইকগাছা, ডুমুরিয়া, দাকোপ, সাতক্ষীরার তালাসহ বিস্তীর্ণ জনপদের সাধারণ মানুষের সরাসরি জেলা সদর খুলনার সাথে সড়ক যোগাযোগে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। লোনা পানির অবহেলিত দূর্গম জনপদের সাধারণ মানুষের দীর্ঘ দিনের প্রাণের দাবি নদীর এই অঞ্চলে একটি ব্রিজ বাস্তবায়ন।

খুলনা-পাইকগাছা প্রধান সড়কের বেহাল অবস্থায় জনপদের মানুষ আশা করেছিল সালতা ব্রিজটি চালু হলে অভ্যন্তরীণ রুটটি এঅঞ্চলের মানুষের বিভাগীয় সদর খুলনা পৌছাতে বিকল্প ভুমিকা রাখবে। তবে ব্রিজ নির্মাণ হলেও এ্যাপ্রোচ সড়কের জটিলতায় তাদের সে আশা শুরুতেই হোঁচট খেতে বসেছে। নদী পারাপারে বিকল্প ব্যবস্থা নাথাকায় বাধ্যতামূলক প্রতিনিয়ত নিত্যপ্রয়োজনীয মালামাল পরিবহনে বোঝাই ভ্যান, নসিমন-করিমন দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে।

সর্বশেষ এলাকাবাসীকে বোকা বানাতে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান ব্রীজের শতভাগ কাজ শেষ না করে এটি উদ্ধোধন হওয়ার আগেই জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে যাতে ব্রিজ নির্মাণে শম্ভুক গতির জন্য এলাকাবাসী আন্দোলন-সংগ্রাম না করে। তবে শেষ রক্ষা হচ্ছেনা তাদের। দুর্ভোগের শিকার এলাকাবাসী সর্বশেষ আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের একজন।

--শেখ দীন মাহমুদ, কপিলমুনি, পাইকগাছা।