Tuesday, December 12, 2017

পাইকগাছায় আধুনিক মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন

পাইকগাছা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ গত ৬ মাস আগে শেষ হলেও এখনো আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তান্তর করা হয়নি। প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর বাজারের প্রাণকেন্দ্রে আধুনিক মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সটি নির্মাণ করা হয়েছে। বিজয় দিবসের আগে কমপ্লেক্সটি হস্তান্তর করার কথা থাকলেও কিছু কাজ অসম্পন্ন থাকায় এবং নানা জটিলতার কারণে চলতি মাসেও কমপেক্সটি হস্তান্তর করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ। 

তবে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আধুনিক কমপ্লেক্সের মতো সুন্দর ব্যবস্থাপনা করে দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নেতৃবৃন্দ।

পাইকগাছা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স (ফাইল ছবি)
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যাদের সবচেয়ে বেশি অবদান ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু স্বাধীন দেশে জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানরা দীর্ঘদিন ছিলেন উপেক্ষিত। যদিও বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর হতে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের নেয়া উদ্যোগের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আধুনিক মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের সিদ্ধান্ত সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

সারাদেশের ন্যায় পাইকগাছা পৌর বাজারের প্রাণ কেন্দ্রে সাড়ে ৮ শতক জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে ২ হাজার ৪০০ স্কয়ারফুট আয়তনের ৩ তলা বিশিষ্ট আধুনিক মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। কমপ্লেক্সের সামনে স্থাপন করা হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি।

কমপ্লেক্সের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৭২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। ২০১৩ সালের ৭ নভেম্বর এর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের তত্তাবধায়নে নির্মাণ কাজ করে খুলনার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ওয়াই এ খাঁন। নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার নির্ধারিত সময় নির্ধারণ করা হয় চলতি বছরের অর্থাৎ ২০১৭ সালের ১৮ জুন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছেন উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর কর্তৃপক্ষ।

এ বছর বিজয় দিবসের আগে কমপেক্সটি মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট হস্তান্তরের কথা ছিল বলে জানিয়েছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শেখ শাহাদাৎ হোসেন বাচ্চু। মুক্তিযোদ্ধা এ কমান্ডার বলেন, বিদ্যুৎ ও পানির লাইন স্থাপনসহ কমপেক্সের ছোট খাটো কিছু কাজ এখনো বাকী রয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম বিজয় দিবসের আগেই কমপ্লেক্স হস্তান্তর করা হবে। তবে জেলা প্রশাসক ও ইউএনও সাহেব আন্তরিক হলে বিজয়ের মাসের মধ্যেই এটি হস্তান্তর করা সম্ভব।

তবে হস্তান্তর যে দিন হোক, আমাদের জন্য সরকার যে সুব্যবস্থা করেছেন তার জন্য আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সকলেই কৃতজ্ঞ। আমাদের উপজেলায় ২৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে প্রায় ২ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা এখনো জীবিত রয়েছেন। স্বাধীনতার পর এক সঙ্গে এতো মুক্তিযোদ্ধার বসার কোন জায়গা ছিলো না। আমরা ঠিকমত কোন মিটিং করতে পারি না। আমাদের ছিল না কোন আয়ের উৎস। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ৩০০ টাকার স্থলে ১০ হাজার টাকা এবং বছরে ২০ হাজার টাকা উৎসব ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। সর্বপরি একটি আধুনিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করার মাধ্যমে আমাদের জন্য একটি স্থায়ী ঠিকানা করে দিয়েছেন। সভা-সমাবেশের জন্য কমপ্লেক্সটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি আয়ের উৎস হিসাবেও এটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে কমপ্লেক্স নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

--মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা।