উপকূলীয়
অঞ্চলের উপজেলা কয়রা। এ উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর
খেওনা সরকারী পুকুরে মাইল তিনেক পাড়ি দিয়ে পানি নিতে আসেন গৃহবধূ শিল্পী।
ওই পুকুর পাড়ে পিএসএফ (পন্ড স্যান্ড ফিল্টার) থেকে পানি নিতে তিনি ট্যাব
ছেড়ে কলসি পাতিয়েই উঠে পড়েন উপরের টিউবওয়েল চাপতে। কলসি ভরার সাথে সাথেই
নিচে নেমে চলে যাচ্ছিলেন বাড়িতে। গৃহবধূ শিল্পীর ন্যায় সেখানে আরও এসেছিলেন ছাত্রী সালেহা খাতুন ও সুমী পারভীনসহ অনেকে।
তারা জানান, এই পুকুরে পিএসএফ হওয়ায় এখন তারা নিরাপদ পানি পান করছেন, আগে তাদের পানির জন্য কষ্ট হত, এখন কিছুটা লাঘব হয়েছে। বহু দূর থেকে এসেও তারা যে নিরাপদ পানি পাচ্ছেন এটি তাদের জন্য সত্যিই আনন্দের বলেও উল্লেখ করেন তারা। এখন এ পুকুরের পানি ধরে রাখাই হবে তাদের নৈতিক দায়িত্ব এমন মন্তব্যও করেন কেউ কেউ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ কয়রার মদিনাবাদ এলাকার ওই সরকারী পুকুরটি এভাবেই মানুষের সুপেয় পানি সমস্যার সমাধান দিচ্ছে। ওয়াটার এইড বাংলাদেশ ও বিগ লটারী ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তর সেখানে তিন লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে সম্প্রতি পিএসএফ স্থাপন করায় ওই পুকুর থেকে প্রায় তিন হাজার মানুষের পানির চাহিদা পূরণ হচ্ছে। উত্তর খেওনা ছাড়াও খেওনা, বেজপাড়া, ১০ বেড়িয়া, রংকিনোকাটি ও পাটনিখালী গ্রামের মানুষ ওই পুকুরের পানি পান করেই জীবন ধারণ করে। পিএসএফ রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও রয়েছে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজব আলী সর্দার বলেন, বিগত আড়াই মাস আগে সেখানে পিএসএফ স্থাপন করায় এলাকাবাসীর সুপেয় পানির অভাব দূর হয়েছে। এখন এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দিলে আরও ভাল হয়। এলাকার প্রতিটি জনগণই এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরিবার প্রতি মাসে ৫ টাকা হারে দিতে রাজী হয়েছে। সে আলোকে মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে ওই পরিবারের প্রয়োজনমত পানি নিতে পারবে সারামাস। এ নিয়ম চালু থাকলে বেসরকারী সংস্থার প্রকল্প শেষ হলেও এলাকাবাসীর পানির চাহিদা মেটাতে কষ্ট হবে না বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় কৃষক মোঃ রজব আলী সরদার বলেন, আগেও এ পুকুর থেকে পানি নিয়ে মানুষ পান করত। কিন্তু এখন পিএসএফ বসানোর ফলে সুপেয় পানি পাচ্ছে। আগেও একটি পিএসএফ ছিল ওই পুকুরে। কিন্তু তা’ এলাকাবাসীর চাহিদা পূরণে ছিল অপ্রতুল। শেষ পর্যন্ত সেটি নষ্ট হয়েছিল।
কাপড় ব্যবসায়ী শমরেশ মিস্ত্রি বলেন, বিগত আড়াই মাস আগে উত্তর খেওনা সরকারী পুকুরে পিএসএফ স্থাপন করার মধ্যদিয়ে শুধু এলাকাবাসীর সুপেয় পানি চাহিদাই পূরণ হয়নি বরং এর মাধ্যমে এলাকার নারী-পুরুষের মধ্যে সচেতনতাও সৃষ্টি হয়েছে। জীবনের জন্যই পানির রক্ষণাবেক্ষণ জরুরী এমনটি এখন মনে করতে পারছেন এলাকাবাসী। আগে পানির জন্য লাইন দিতে হত, মারামারি হত, এখন আর তেমনটি হয় না। শৃংখলিতভাবে যে যার মত পানি নিয়ে যাচ্ছেন অনায়াসে।
পিএসএফ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ বলেন, ওই পুকুরের পানি ফিল্টার করে শুধু পানযোগ্যই করা হয় না, বরং পানি নেয়ার সময় যে পানি ওয়েষ্ট হয় সেগুলোও রিফাইন করে আবার পুকুরে ফেলা হয়। এতে একটু পানিও অপচয় হওয়ার আশংকা থাকে না।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের মানুষ ওই পুকুরের পানি দীর্ঘদিনযাবৎ পান করে আসছিল। পুকুরে পিএসএফ না থাকায় এলাকাবাসী সরাসরি পানি পান করায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হত। এজন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ৫বছর আগে একটি পিএসএফ দেয়। কিন্তু এত মানুষের চাপে সেটা নষ্ট হয়ে যায়। ওই পুকুরের দূষিত পানি পান করায় ওই এলাকার মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।
এ সকল বিষয় বিবেচনা করে রূপান্তর, ওয়াটারএইড ও বিগ লটারীর সহযোগিতায় পুকুরটির পাড় উঁচু করে, চারিপাশ দিয়ে ১৪ ইঞ্চি ইটের দেয়াল দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে যাতে পাড় ভেঙে না যায়। নষ্ট পিএসএফটি সংস্কার করা হয়েছে। পাশে আরো একটি নতুন পিএসএফ স্থাপন করা হয়েছে। ২টি পিএসএফ এ ওঠা নামার সিঁড়ি করে দেয়া হয়েছে। এখন এলাকাবাসী নিরাপদ পানি পান করছে। বাঁধের উপরে ৬ ফুট চওড়া, উচ্চতা গড়ে ৫ ফুট নিচের অংশ চওড়া ১৮ ফুট। এছাড়া বাঁধের চার পাশে ১৪ ইঞ্চি উঁচু করে ইটের প্রটেকশন ওয়াল তৈরী করা হয়। যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে এবং দুর্যোগে পানির আঘাতে পুকুরের পাড় রা করতে পারে।
‘এ্যাডাপটিং ওয়াশ ফর কাইমেট চেঞ্জ’ এর আওতায় স্থাপিত পিএসএফ সম্পর্কে রূপান্তরের সূত্রটি জানায়, এতে তাদের মোট ব্যয় হয় ২ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৪ টাকা। এছাড়া স্থানীয় জনগণের অনুদান ১০ হাজার ২৭ টাকা।
রূপান্তরের এ্যাডাপটিং ওয়াশ ফর কাইমেট চেঞ্জ প্রকল্পের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উত্তর খেওনা সরকারী পুকুরে পিএসএফ স্থাপন করায় তারা সহায়তা করলেও এখন পুরো পুকুরটিই স্থানীয় জনসাধারণ দেখভাল করছেন। অর্থাৎ এটিকে এলাকাবাসী তাদের নিজস্ব সম্পদ এবং নিজস্ব প্রয়োজনেই এর রক্ষণাবেক্ষণ করছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তারা জানান, এই পুকুরে পিএসএফ হওয়ায় এখন তারা নিরাপদ পানি পান করছেন, আগে তাদের পানির জন্য কষ্ট হত, এখন কিছুটা লাঘব হয়েছে। বহু দূর থেকে এসেও তারা যে নিরাপদ পানি পাচ্ছেন এটি তাদের জন্য সত্যিই আনন্দের বলেও উল্লেখ করেন তারা। এখন এ পুকুরের পানি ধরে রাখাই হবে তাদের নৈতিক দায়িত্ব এমন মন্তব্যও করেন কেউ কেউ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ কয়রার মদিনাবাদ এলাকার ওই সরকারী পুকুরটি এভাবেই মানুষের সুপেয় পানি সমস্যার সমাধান দিচ্ছে। ওয়াটার এইড বাংলাদেশ ও বিগ লটারী ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তর সেখানে তিন লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে সম্প্রতি পিএসএফ স্থাপন করায় ওই পুকুর থেকে প্রায় তিন হাজার মানুষের পানির চাহিদা পূরণ হচ্ছে। উত্তর খেওনা ছাড়াও খেওনা, বেজপাড়া, ১০ বেড়িয়া, রংকিনোকাটি ও পাটনিখালী গ্রামের মানুষ ওই পুকুরের পানি পান করেই জীবন ধারণ করে। পিএসএফ রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও রয়েছে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজব আলী সর্দার বলেন, বিগত আড়াই মাস আগে সেখানে পিএসএফ স্থাপন করায় এলাকাবাসীর সুপেয় পানির অভাব দূর হয়েছে। এখন এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দিলে আরও ভাল হয়। এলাকার প্রতিটি জনগণই এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পরিবার প্রতি মাসে ৫ টাকা হারে দিতে রাজী হয়েছে। সে আলোকে মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে ওই পরিবারের প্রয়োজনমত পানি নিতে পারবে সারামাস। এ নিয়ম চালু থাকলে বেসরকারী সংস্থার প্রকল্প শেষ হলেও এলাকাবাসীর পানির চাহিদা মেটাতে কষ্ট হবে না বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় কৃষক মোঃ রজব আলী সরদার বলেন, আগেও এ পুকুর থেকে পানি নিয়ে মানুষ পান করত। কিন্তু এখন পিএসএফ বসানোর ফলে সুপেয় পানি পাচ্ছে। আগেও একটি পিএসএফ ছিল ওই পুকুরে। কিন্তু তা’ এলাকাবাসীর চাহিদা পূরণে ছিল অপ্রতুল। শেষ পর্যন্ত সেটি নষ্ট হয়েছিল।
কাপড় ব্যবসায়ী শমরেশ মিস্ত্রি বলেন, বিগত আড়াই মাস আগে উত্তর খেওনা সরকারী পুকুরে পিএসএফ স্থাপন করার মধ্যদিয়ে শুধু এলাকাবাসীর সুপেয় পানি চাহিদাই পূরণ হয়নি বরং এর মাধ্যমে এলাকার নারী-পুরুষের মধ্যে সচেতনতাও সৃষ্টি হয়েছে। জীবনের জন্যই পানির রক্ষণাবেক্ষণ জরুরী এমনটি এখন মনে করতে পারছেন এলাকাবাসী। আগে পানির জন্য লাইন দিতে হত, মারামারি হত, এখন আর তেমনটি হয় না। শৃংখলিতভাবে যে যার মত পানি নিয়ে যাচ্ছেন অনায়াসে।
পিএসএফ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ বলেন, ওই পুকুরের পানি ফিল্টার করে শুধু পানযোগ্যই করা হয় না, বরং পানি নেয়ার সময় যে পানি ওয়েষ্ট হয় সেগুলোও রিফাইন করে আবার পুকুরে ফেলা হয়। এতে একটু পানিও অপচয় হওয়ার আশংকা থাকে না।
সরেজমিনে পরিদর্শনকালে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের মানুষ ওই পুকুরের পানি দীর্ঘদিনযাবৎ পান করে আসছিল। পুকুরে পিএসএফ না থাকায় এলাকাবাসী সরাসরি পানি পান করায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হত। এজন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ৫বছর আগে একটি পিএসএফ দেয়। কিন্তু এত মানুষের চাপে সেটা নষ্ট হয়ে যায়। ওই পুকুরের দূষিত পানি পান করায় ওই এলাকার মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।
এ সকল বিষয় বিবেচনা করে রূপান্তর, ওয়াটারএইড ও বিগ লটারীর সহযোগিতায় পুকুরটির পাড় উঁচু করে, চারিপাশ দিয়ে ১৪ ইঞ্চি ইটের দেয়াল দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে যাতে পাড় ভেঙে না যায়। নষ্ট পিএসএফটি সংস্কার করা হয়েছে। পাশে আরো একটি নতুন পিএসএফ স্থাপন করা হয়েছে। ২টি পিএসএফ এ ওঠা নামার সিঁড়ি করে দেয়া হয়েছে। এখন এলাকাবাসী নিরাপদ পানি পান করছে। বাঁধের উপরে ৬ ফুট চওড়া, উচ্চতা গড়ে ৫ ফুট নিচের অংশ চওড়া ১৮ ফুট। এছাড়া বাঁধের চার পাশে ১৪ ইঞ্চি উঁচু করে ইটের প্রটেকশন ওয়াল তৈরী করা হয়। যাতে পানি প্রবেশ করতে না পারে এবং দুর্যোগে পানির আঘাতে পুকুরের পাড় রা করতে পারে।
‘এ্যাডাপটিং ওয়াশ ফর কাইমেট চেঞ্জ’ এর আওতায় স্থাপিত পিএসএফ সম্পর্কে রূপান্তরের সূত্রটি জানায়, এতে তাদের মোট ব্যয় হয় ২ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৪ টাকা। এছাড়া স্থানীয় জনগণের অনুদান ১০ হাজার ২৭ টাকা।
রূপান্তরের এ্যাডাপটিং ওয়াশ ফর কাইমেট চেঞ্জ প্রকল্পের কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উত্তর খেওনা সরকারী পুকুরে পিএসএফ স্থাপন করায় তারা সহায়তা করলেও এখন পুরো পুকুরটিই স্থানীয় জনসাধারণ দেখভাল করছেন। অর্থাৎ এটিকে এলাকাবাসী তাদের নিজস্ব সম্পদ এবং নিজস্ব প্রয়োজনেই এর রক্ষণাবেক্ষণ করছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।