Thursday, March 27, 2014

পাইকগাছায় ৮০ ভাগ নলকূপে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক

পাইকগাছার অধিকাংশ নলকূপে মাত্রা অতিরিক্ত আর্সেনিক ধরা পড়লেও ২০০৩ সালের পর আর কোন পরীক্ষা না হওয়ায় আর্সেনিক সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নির্ণয় করা হচ্ছে না। ২০০৯ থেকে ২০১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে ১০০ জন আর্সেনিক আক্রান্তের তালিকা করা হয়েছে।

পাইকগাছায় সরকারিভাবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ ২০০৩ সালে অগভীর নলকূপে আর্সেনিক পরীক্ষা করে। পাইকগাছা পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে পরীক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়। তবে যথেষ্ট পরিমাণ আর্সেনিক পরীক্ষার যন্ত্রপাতি, মেডিসিন ও লোকবল না থাকায় উপজেলার সকল নলকূপে এ পরীক্ষা চালানো সম্ভব হয়নি বলে সংশি­ষ্ট সূত্রে জানা যায়।

তবে যেগুলিতে পরীক্ষা কার্য চালানো হয়েছে তার অধিকাংশতেই আর্সেনিক ধরা পড়েছে। এদিকে এ পানি পান করে অনেকেই আর্সেনিক আক্রান্ত রোগে ভুগছে। ২০০৩ সালের পর থেকে প্রায় ১১ বছর পার হলেও আর কোন জরীপ কার্য না করে শুধুমাত্র ধারণার উপর চলছে এ সংক্রান্ত কার্যক্রম।

সরকারি তথ্য মতে, পাইকগাছায় ১৩ হাজার ৬ শত ৩৫টি নলকুপ পরীক্ষা করে ৮ হাজার ৭৬টি নলকূপে আর্সেনিক পাওয়া যায়। যার গড় পরিমাণ ৬০%। পাইকগাছা পৌরসভায় ১১০৮টির মধ্যে আর্সেনিক ধরা পড়ে ১৯৬টিতে। যার গড় পরিমাণ- ১৯%। উপজেলার ২১৪টি গ্রামের মধ্যে ৯৫টি গ্রামে আর্সেনিক পরীক্ষা করে গড় হার দেখা যায় ৮০%।

এদিকে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমান পাইকগাছায় সরকারি নলকূপের সংখ্যা ৪১৫৩টি। যার মধ্যে আর্সেনিকজনিত কারণে নষ্ট হয়েছে ১৮৬৩টি।

পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে­ক্স সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে পরীক্ষা করে ১১ জনের মধ্যে আর্সেনিক পাওয়া গেছে। যার মধ্যে গোপালপুর গ্রামের আব্দুর রউফ, লতার ক্ষিরোদ রায়, মালথের আবুল হোসেন, সাহপাড়ার বাবুল সরদার, হরিঢালীর আব্দুল গফফার গাজী, হোসেন আলী গাজী গফফার সরদার, গদাইপুরের ওয়াজেদ সরদার, সোনাতনকাটির শিউলী বেগম, গদাইপুরের নেছার শেখ, তকিয়ার আনোয়ার সরদার।

জুলাই ২০০৯ থেকে ডিসেম্বর ২০১২ পর্যন্ত পাইকগাছা উপজেলায় অতি মাত্রায় আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০০ জন। যার মধ্যে হরিঢালী ইউনিয়নে ১৫ জন, কপিলমুনিতে ৪ জন, লতায় ৭ জন, সোলাদানায় ১ জন, লস্করে ২৫ জন, গদাইপুরে ৩৩ জন, রাড়ুলীতে ৩ জন ও চাঁদখালীতে ১২ জন।

আর্সেনিকের ব্যাপারে দ্রুত সরকারিভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কেমিক্যাল সরবরাহ পেতে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন।