Tuesday, March 25, 2014

ঘুর্ণিঝড় আতংকে পাইকগাছার ৪ লক্ষাধিক মানুষ

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অব্যাহত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঝুকিপূর্ণ স্থানে থাকা উপকূলীয় পাইকগাছার ৪ লক্ষাধিক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়সহ নানাবিধ সংকটে দিনাতিপাত করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা না থাকায় অজানা আতংকে ভুগছে উপকুলবাসী।

৪ লক্ষাধিক মানুষের জন্য কোন সাইক্লোন শেল্টার নাই। প্রাইমারী স্কুল নির্ভর ২৫টি সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে যা জনসংখ্যার তুলনায় খুবই সামান্য। ১০টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত উপকুলীয় পাইকগাছা উপজেলা। এক সময় জনদপটি ছিল শষ্য শ্যামল সবুজ ঘেরা মনুষ্য বসবাসের নিরাপদ এলাকা। কিন্তু ৮০ দশক থেকে এ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে শুরু হয় পরিবেশ বিধ্বংসী লবণ পানির চিংড়ি চাষ, শুরু হয় পরিবেশ শাসনের পালা।

বিস্তীর্ণ মিঠা পানির এলাকা চিংড়ি চাষের উপযোগী হিসেবে প্রস্তুত করতে অনুপ্রবেশ করানো হয় মাত্রাতিরিক্ত লবণ পানি। আর তখন থেকে মুলতঃ মায়াবী ছায়া সুশীতল জনপদ পড়তে থাকে পরিবেশ বিপর্যয়ের কালো থাবা। বিরূপ প্রভাব পড়তে থাকে জীব-বৈচিত্র্যের উপর। হ্রাস পেতে থাকে নদ-নদী, খাল-বিলের নাব্যতা। সম্প্রতি সময় নদী সমুহের নাব্যতা হ্রাসে জোয়ারের উগে দেওয়া পানিতে প্লাবিত হচ্ছে পাইকগাছাসহ আশ-পাশের বিস্তীর্ণ এলাকা।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের উড়িষ্যয় ১৯৯৬ সালে পরিবেশ বিধ্বংসী চিংড়ি চাষ নিষিদ্ধ ঘোষনার পর বাংলাদেশও ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারীতে মহামান্য হাইকোর্ট উপকুলীয় অঞ্চলে কৃষি জমিতে লবণ পানি উঠিয়ে চিংড়ি চাষ নিষিদ্ধ করেন। তবে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনের দুর্বলতা ও চরম অসচেতনতায় আইনটির যথাযথ প্রয়োগ না করার কারণে আলোর মুখ দেখেনি আজও।

সর্বশেষ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঘুর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস, বন্যা এ অঞ্চলের মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। তবে দুর্যোগ মোকাবেলায় যথাযথ প্রযুক্তি ও তার ব্যবহার, নিরাপদ আশ্রয়ে পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার নির্মান না করলে ৪ লক্ষ মানুষ থাকছে চরম ঝুকিতে।

এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবির জানান, তার আওতাধীন উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে সুন্দরবনের কোল ঘেষা গড়ইখালী, দেলুটি, লতা, চাঁদখালী ও সোলাদানা ইউনিয়নে পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার না থাকায় সেখানকার মানুষ সব সময় ঝুকিতে থাকে।