Friday, September 19, 2014

দুঃখজয় : দুধ উৎপাদন করে সচ্ছলতার পথ পেয়েছে আইলাবিধ্বস্ত দক্ষিণ সলুয়ার মানুষ

সত্যপদ দাস নিতান্তই একজন গরিব মানুষ। চাষের জমির পরিমাণ এতই কম যে, তা থেকে বছরের ভাত হয় না। তাই চাষবাসের সাথে বাড়তি আয়ের জন্য স্বল্প বেতনের দোকান কর্মচারীর কাজ নিয়েছিলেন। কিন্তু এ কাজে তাকে এত বেশি সময় দিতে হতো যে, জমি বলতে যেটুকু ছিল তা আবাদ করার সময়-সুযোগ পেতেন না। আর তাই সংসারে টানাপড়েন লেগেই থাকত। এ অবস্থা থেকে তাকে সচ্ছলতার পথ দেখায় পল্লী দুগ্ধ উৎপাদন সমবায় সমিতি।

সত্যপদ দাসের বাড়ি দক্ষিণ সলুয়া গ্রামে। এ গ্রামে দুগ্ধ উৎপাদন সমবায় সমিতির কার্যক্রম শুরু হয় গত বছর। গ্রামের ১২৫ জন এ সমিতির সদস্য। সমিতির সভাপতি সরদার মমিন উদ্দিন জানান, সমিতি পরিচালিত ফার্মে ১৩টি গাভী এবং সদস্যদের বাড়িতে ৫০টি গাভীতে দুধ দিচ্ছে।

এভাবে প্রতিদিন ৫০০ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। তারা পাইকারি দাম কেজি প্রতি ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করে প্রতিদিন সাড়ে ১৭ হাজার টাকা পান। সব খরচ বাদে সদস্যরা পান ১০০ টাকা করে। এটা তাদের বাড়তি আয়। ক্ষেত-খামার, ব্যবসায়-বাণিজ্য, চাকরি-বাকরি এমনকি মহিলারা গৃহস্থালি কাজ করেও দুধ উৎপাদনে অংশ নিতে পারছেন।

তিনি জানান, আইলা উপদ্রুত এ জনপদের মানুষ আজো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করে তাদের আয়ের পরিমাণ বাড়াতে পারলে সঙ্কট উত্তরণে সহায়ক হবে। এ জন্য প্রতিদিন সদস্যদের বাড়তি আয়ের পরিমাণ যাতে বাড়ে সে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আর এ জন্য পুঁজির প্রয়োজনে কৃষি ব্যাংক বরাদ্দ করেছে এক কোটি ৩৭ লাখ টাকার ঋণ।

সমিতির সভাপতি সরদার মমিন উদ্দিন জানান, যোগাযোগ সঙ্কটে তাদের উৎপাদিত দুধ বিক্রি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। প্রতিদিন ৩৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে দুধ বিক্রির জন্য সাতক্ষীরায় যেতে হয়। দীর্ঘ এ পথের কপিলমুনি থেকে আঠারমাইল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার বছরের ছয় মাস পানিতে ডুবে থাকে। শুকনো মওসুমে পানি সরে গেলেও রাস্তা চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। দূরের পথ হলেও রাস্তা ভালো হলে কোনো সমস্যা হতো না।