Wednesday, April 8, 2015

পাইকগাছায় কপোতাক্ষ খননে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

ভিটেছাড়া হতে যাচ্ছে পাইকগাছার কয়েকশ’ পরিবার


কপোতাক্ষ নদের পাইকগাছা অংশের খনন কাজে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে পাইকগাছার হরিঢালী ইউনিয়নের দেয়াড়া, রহিমপুর ও উলুডাঙ্গা গ্রামের কয়েকশ’ পরিবার ভিটেমাটি হারাতে বসেছে। 

এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার হরিঢালী এলাকা থেকে কয়েকশ’ মানুষ যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে মানববন্ধন করেন। এর আগে তারা বিভিন্ন শ্লোগান সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লাকার্ড নিয়ে যশোর শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

ফাইল ফটো

ভুক্তভোগীরা জানান, কপোতাক্ষের ভাঙনের ফলে পাইকগাছা উপজেলার রহিমপুর গ্রাম একেবারেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। একই অবস্থা তৈরি হয় দেয়াড়া ও উলুডাঙ্গা গ্রামেও। এ তিন গ্রামের কয়েকশ’ পরিবার তাদের রেকর্ডীয় পৈত্রিক সম্পত্তি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়। পরে পলি ভরাটের কারণে উল্লিখিত গ্রাম তিনটি নতুন করে জেগে ওঠে। আশায় বুক বাঁধে ভিটেমাটি হারানো শত শত মানুষ। তারা নিজস্ব জমিতে ফিরতে শুরু করেছে।

এরই মধ্যে বর্তমান সরকার যশোর থেকে পাইকগাছা পর্যন্ত কপোতাক্ষ খননে ২২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কেবল তাই নয়, খনন কাজও চলছে। বর্তমানে সাতক্ষীরা অংশে খনন কাজ চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড পাইকগাছা অংশে কপোতাক্ষ খনন কাজ এসএ রেকর্ড অনুযায়ী নদের জায়গা দিয়ে না করে রেকর্ডীয় ব্যক্তি মালিকানার জমির উপর দিয়ে করার জন্যে ডিজাইন তৈরি করেছে।
এটি করা হলে রহিমপুর, দেয়াড়া, উলুডাঙ্গা, হরিঢালীসহ কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ ফের ভিটেছাড়া হবে। একইসাথে এই অংশে খনন কাজে সরকারের দ্বিগুণেরও বেশি খরচ হবে। অপরদিকে, এসএ রেকর্ড অনুযায়ী কপোতাক্ষ নদ যেদিক দিয়ে প্রবাহমান ছিল সেখানে খনন কাজ করছে খরচ অর্ধেকের বেশি কমে যাবে। পাশাপাশি কপোতাক্ষ তুলনামূলক বেশি মাত্রায় প্রাণ ফিরে পাবে। 

যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকান্ডে হরিঢালী এলাকার মানুষ ফুঁসে উঠেছে। তারা যে কোনো মূল্যে পাউবোর এ কাজ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। 

মঙ্গলবার মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, আন্দোলনের নেতা উপাধ্যক্ষ আফসার আলী, নির্মল কুমার মজুমদার, মুজিবর রহমান, আমজাদ হোসেন প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। সেখানে বলা হয়, জীবন থাকতে কোনো রেকর্ডীয় জমির উপর দিয়ে খনন কাজ করতে দেয়া হবে না।