Wednesday, April 23, 2014

আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে !

সুখবর নেই আবহাওয়া বার্তায়। বৈশাখের চলমান প্রচন্ড তাপদাহে অতিষ্ঠ মানুষ যখন বৃষ্টির আশায় ক্ষণ গুনছে তখন আবহাওয়া বার্তা হচ্ছে সপ্তাহখানেক চলবে এ অবস্থা। দিন-রাতের তাপমাত্রা ডিগ্রি হিসাবে যা-ই হোক গরমের মাত্রা বুঝি সহ্য সীমার উপর দিয়ে যাচ্ছে। হিটস্ট্রোকের শঙ্কা বাড়ছে। কবির ভাষায় 'রুদ্র বৈশাখ' তার রুদ্র রূপই দেখাচ্ছে।

এ অবস্থায় মানুষের দৈনন্দিনের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। শুধু মানুষ বলি কেন-পশুপাখিরও একই হাল। প্রখর রৌদ্রে গাছপালাও নেতিয়ে পড়ছে। ঘরে-বাইরে দু'দন্ড স্বস্তিতে কাটানোর উপায় নেই। বাইরের বাতাসে আগুনের হলকা, ঘরে ফ্যানের বাতাসেও ভ্যাপসা গরম কাটছে। এ সময়টা দুঃসহ হয়ে উঠেছে শ্রমজীবী মানুষের জন্যে। বিশেষ করে ছায়াহীন খোলা মাঠে যাদের কাজ করতে হয় তাদের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। গনগনে সূর্যের তাপ, ঘাম ঝরানো গরম-হাঁসফাঁস অবস্থা। শিশু-বৃদ্ধদের জন্যেও যাচ্ছে খারাপ দিন। ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে সর্বত্র। প্রচন্ড গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধির কথা জানা সবার। সেজন্যে খাওয়া-দাওয়ায় ব্যতিক্রম ঘটলেই দেখা দিতে পারে বিপত্তি। পানি বেশি করে খাওয়া উচিত, তবে সেই পানি হতে হবে বিশুদ্ধ।

বাইরে থেকে এসে, কায়িক শ্রমের পরপরই গরম তাড়াতে, পিপাসা মিটাতে কোনো মতেই ঢক ঢক করে পানি খাওয়া-বিশেষ করে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাওয়া উচিত নয়। বিশ্রাম নেওয়ার পর শরীর ঠান্ডা হলে পানি পান করা ভালো। রৌদ্রে বাইরে গেলে ছাতা ব্যবহার করা আবশ্যক। এ সময়ে বিশেষ যত্ন-খেয়ালের দাবি করতে পারে শিশু-বৃদ্ধরা।

বৈশাখের এমন রুদ্ররূপ যে নতুন কিছু তা নয়। এমন অভিজ্ঞতা আমাদের প্রায় প্রতি বছরের। এ সময়ের করণীয় বর্জনীয় বিশেষাদি সম্পর্কেও কমবেশি সবার জানা। সাবধানতাই গরমজনিত শারীরিক বিপত্তি এটি থেকে রক্ষা করতে পারে। তাপদাহ চলতে থাকলে হিটস্ট্রোকের শঙ্কাই বাড়বে। সে ব্যাপারেও সাবধান হওয়া উচিত।

প্রকৃতির ওপর কারো হাত নেই। প্রকৃতিকে শাসন করার ক্ষমতা বিজ্ঞানও আয়ত্ত করতে পারেনি। সে ক্ষেত্রে ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচার পথ সাবধানতা। বৃষ্টি হলে তাপদাহ কমতে পারে; কিন্তু চাইলেইতো আশা যায় না, সেতো প্রকৃতির হাতে। সে ক্ষেত্রে প্রার্থনা হতে পারে কেবল 'আল্লাহ মেঘ দে, পানি দে ছায়া দেরে তুই'।