Sunday, July 20, 2014

কয়রায় চিংড়িতে মড়ক ঘের মালিকরা সর্বশান্ত

উপকুলীয় জনপদ কয়রা উপজেলায় সম্প্রতি ঘেরের বাগদা চিংড়ি ব্যাপকহারে মরে যাওয়ায় সর্বশান্ত হতে বসেছেন এ অঞ্চলের কয়েক হাজার চিংড়ি চাষী। এর প্রতিষেধক অথবা প্রতিরোধের উপায় খুঁজে না পাওয়ায় চরম হতাশায় ভুগছেন এসব চিংড়ি চাষীরা।

কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দীন হোসেন এটাকে চিংড়ির পরিবেশের ওপর হঠাৎ পরিবর্তনের কুফল হিসাবে সনাক্ত করেছেন। তিনি বলেন, চিংড়ি সাধারনত যে তাপমাত্রা ও লবনাক্ততা সহনশীল হঠাৎ তার পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে অধিক বৃষ্টি ও তাপমাত্রার পরিবর্তন জনিত কারনে ঘেরের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাগদা চিংড়ি মারা যাচ্ছে। তবে চিংড়ি চাষীরা এটাকে ভাইরাসজনিত কারন হিসাবে মনে করছেন।

কয়রা উপজেলার আটরা গ্রামের চিংড়ি ঘেরের মালিক আসাদুল ইসলাম মৌসুমের শুরুতেই স্থানীয় চিংড়ি ব্যবসায়িদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা দাদন ও নিজের তিন লাখ মোট ৫ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ৩৫ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করেছিলেন। আশা ছিল জুলাই মাসের মধ্যে তার সমস্ত বিনিয়োগ উঠে লাভের মুখ দেখবেন তিনি। কিন্তু বর্ষার শুরুতেই ঘেরের দু’একটি চিংড়ি মরতে শুরু করে বর্তমানে একেবারেই সব চিংড়ি মরে সারা হয়েছে। যে কারনে ঘেরের আসল টাকা ফিরে পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।

হোগলা মৌজার ঘের মালিক মতিয়ার রহমান বলেন, ১০০ বিঘা জমি ইজারা নিয়ে এ মৌসুমে চিংড়ি চাষ শুরু করেছিলাম। সব মিলিয়ে ১২ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছি। কিন্তু যে মুহুর্তে বেশি চিংড়ি উঠে আসবে ঠিক সে মুহুর্তে মড়কে সব চিংড়ি মরে সাবাড় হয়ে গেছে। এখন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।’

উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্য মতে, কয়রা উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ১০ হাজারের মত চিংড়ি ঘের আছে। এর মধ্যে পরিকল্পিত ভাবে দুই হাজার বাকি সব অপরিকল্পিত চাষাবাদ হয়। গত মৌসুমে এসব চিংড়ি খামার গুলোতে ভাইরাসের আক্রমন কম ছিল। এ বছরের শুরুতে দু’একটি ঘেরে মাছ মারা যাওয়ার খবর ছিল। বর্তমানে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে ১শ’ কোটি টাকার মত ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে বলে জানা যায়। যা এলাকার সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।