Thursday, September 18, 2014

ভালবাসার মূল্য দিতে যেয়ে মরিয়াম এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে

কয়রা উপজেলা থেকে বেড়াতে এসেছিল মরিয়াম তার নিজ বোনের বাড়ীতে, পাইকগাছা উপজেলা গদাইপুর ইউনিয়নের হিতামপুর গ্রামে। সেখানেই দেখা হয় হিতামপুর গ্রামের জনৈক আমজেদ গাজীর পুত্র সোনা গাজী (২৬) এর সাথে। সেই দেখা থেকে সে প্রায়ই উত্যাক্ত করতো মরিয়ামকে। ওখানেই থেমে থাকে নি। সোনা গাজী ছুটে যায় কয়রার বাগালি ইউনিয়নের বয়লা হারানিয়া গ্রামে। বিভিন্ন রকম ছলনার বেড়া জালে মরিয়ামকে আবদ্ধ করে ফেলে।

এক পর্যায়ে মরিয়াম সোনা গাজীর হাত এড়াতে না পেরে সোনা গাজীর হাত ধরে বাড়ী থেকে চলে আসে। এক পর্যায়ে বিয়ে করে। বিয়ের পরে সোনা গাজী মরিয়ামকে তার বাড়ীতে নিয়ে তোলে। বাড়ীতে আসার পর থেকে বিভিন্নভাবে সোনা গাজীর পিতা মাতা পুত্রকে যৌতুকের চাপ দিতে বলে এক পর্যায়ে মরিয়াম গর্ভবতি হলে সেই অবস্থায় সোনা গাজীর নির্যাতনের স্বীকার হয়ে মুমুষ্য অবস্থায় পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়।

পরবর্তীতে বিভিন্ন আশ্বাস এর মাধ্যেমে মরিয়ামকে বাড়ীতে ফিরিয়ে নেয়। সেই থেকে কারণে অকারণে মরিয়মের উপর চলে অমানষিক নির্যাতন। এক পর্যায়ে সোনা গাজীর এহেন কর্মে ২০১০ সালে পাইকগাছা থানায় একটি সাধারণ জিডি করেন। যার জিডি নং-১০৭২, তারিখ-১৭/০৪/২০১০ইং। ঠিক তেমনিভাবে গত ইং-১৪/০৭/১৪ তারিখ সকাল আনুঃ ৯ ঘটিকার সময় মরিয়ামকে তার পিতার নিকট পঞ্চাশ হাজার টাকা আনিবার জন্য মোবাইল করতে বলে। উক্ত মোবাইল না করার কারণে সোনা গাজী মরিয়ামের সহিত বিভিন্ন গালি গালাজ করতে থাকে।

এক পর্যায়ে ঐ দিন বিকাল আনুঃ ৩ ঘটিকার সময় মরিয়াম সাংসারিক কাজে ব্যস্ত থাকাবস্থায় সোনা গাজী মরিয়ামকে পুনরায় মোবাইল ফোন করতে বললে মরিয়াম অস্বীকৃতী জানায় তখন সোনা গাজী মরিয়ামকে তলপেটে লাথি মেরে ফেলে দেয়। উপায়ন্ত না পেয়ে মরিয়াম তার ঘরে আত্মরা করার জন্য ঢুকলে সোনা গাজী লোহার শাবল নিয়ে মরিয়ামকে তাড়া করে এবং এক পর্যায়ে শাবল দিয়ে আঘাত করে উক্ত শাবল বেড়া ভেদ করে মরিয়ামের ডান হাতে লাগে এবং রক্তাক্ত জখম হয়। ডান হাতে মোট ১৪টি সেলাই করা হয়।

মরিয়াম তার শ্বশুর শাশুড়ীকে ডেকে চিৎকার করে বাচার আকুতি করলে সোনা গাজীর পিতা মাতার মন গলেনি। উপরন্তু সোনা গাজীকে এই বলে হুকুম করে যে, বাপের বাড়ী থেকে টাকা না আনলে মাগির চুল ধরে রাস্তায় বের করে দে। তখন মরিয়ামের চিৎকার শুনে তার আপন বোন ছুটে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় বোনকে উদ্ধার করে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

মরিয়ামের উপর ইতি পূর্বে যে নির্যাতন হয়েছে তাতে মরিয়ামের গরীব পিতা মাতার বেশকিছু অর্থ খরচ করে সুস্থ্য করে তোলে। কিন্তু যৌতুক লোভী সোনা গাজী ও তার পরিবারের মরিয়ামের প্রতি এতটুকু দয়া হয়নি। মরিয়ামের গর্ভে ৭ মাসের একটি পুত্র সন্তান আছে। সেও তার পিতার এহেন আচরন ও অত্যাচারের সহ্য করে রয়েছে। সোনা গাজী বর্তমানে তার পিতার আশ্বাসে মরিয়ামের পরিবারের প্রতি বিভিন্ন ধরণের হুমকি প্রদর্শন করছে এবং সে নিজেকে নিয়ে গর্ভ করে বলছে আইন তার কিছুই করার ক্ষমতা রাখেনা।

বিষয়টি নিয়ে মরিয়ামের পরিবার আইনের দারস্থ হওয়ার জন্য সমাজের বিত্তবান ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উর্দ্ধতন কর্মকর্তার প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

চলবে....