Friday, June 21, 2013

সাহাপাড়া খালের উপর নির্মাণাধীন ব্রীজের ভাগ্য অনিশ্চিত

ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সমন্বয়হীনতা

ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সমন্বয়হীনতার কারণে উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর-ওড়াবুনিয়া গ্রামের সীমান্ত সাহাপাড়া খালের উপর নির্মাণাধীন ব্রীজের নির্মাণ কাজ থমকে দাঁড়িয়েছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের আশংকায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ওড়াবুনিয়া গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক বাসীন্দা।

বর্ষাকালে বিশেষ করে এলাকার গৃহবধূরা তাদের পরিবারের খাবার পানি সংগ্রহ ও ছেলেমেয়েদের স্কুলে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে কি উপায় হবে তা নিয়ে রীতিমত দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বর্ষা মৌসুমের আগে ব্রীজের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানালেও অদ্যাবধি নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়নি বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সাহাপাড়া খালের উপর প্রায় ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে পাকা কাঠের পোল (ছোট ব্রীজ) নির্মাণ কাজ শুরু হয় বিগত ২০১২ সালের মার্চ মাসে। সে হিসাবে গত ১৫ মাসে ঠিকাদার শুধুমাত্র পাকা পিলার গেঁথে কাঠামো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে রেখেছে। এখন বাকি রয়েছে কাঠের পাটাতন তৈরীর কাজ।

সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার শেখ ফজলুর রহমান বলেন, দরপত্রের সিডিউল অনুযায়ী যে কাঠের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার থেকে অনেক বেশি কাঠ প্রয়োজন হচ্ছে। বিষয়টি এলজিইডি দপ্তরে জানিয়েছি। কাঠের সমাধান হলেই খুব শীঘ্রই ব্রীজের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে জানালেও ঠিকাদার কথা রাখতে পারেনি। গতকাল ১৭ জুন পর্যন্ত নির্মাণ কাজে হাত দেয়নি ঠিকাদার।

এদিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অধ্যুষিত ওড়াবুনিয়া গ্রামের প্রায় সহস্রাধিক বাসিন্দা রয়েছেন উৎকন্ঠার মধ্যে। কেননা বর্ষা মৌসুম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। ব্রীজের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় সাহাপাড়া খাল পার হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই গ্রামের গৃহবধূরা ক্ষোভের সাথে বলেন, আমাদের খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয় খাল পার হয়েও অনেক দূরে কৃষ্ণনগর গ্রামে গিয়ে। কাদামাটির রাস্তায় কলস ভর্তি পানি নিয়ে হাঁটাচলা অনেক দূরহ ব্যাপার। আমরা বড়রা যাহোক কোনমতে চলাচল করতে পারলেও এই গ্রামের অনেক কোমলমতি ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুল-মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে। তাদের স্কুলে আসা-যাওয়া করতে গিয়ে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। ব্রীজের কাজ শেষ না হওয়ায়, বিশেষ করে খালটি পার হওয়া ছোট-বড় সকলের ক্ষেত্রে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, গত বছরের এপ্রিলে উক্ত পাকা পোলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। অনেক আগেই এর নির্মাণ কাজ শেষ হবার কথা। তবে দরপত্রের সিডিউল অনুযায়ী বাস্তবতার মিল না থাকায় সেটি সমন্বয়ের জন্য ঠিকাদার আপাততঃ কাজ বন্ধ রেখেছে। জনগুরুত্বপূর্ণ ব্রীজটির নির্মাণ কাজ যাতে দ্রুত শেষ হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।