Wednesday, April 30, 2014

খুলনা-পাইকগাছা সড়কে আবারও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবার আশঙ্কা

আসন্ন বর্ষা মৌসুমে খুলনা-পাইকগাছা সড়কে আবারও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তালা থেকে কপিলমুনির গোলাবাড়ি পর্যন্ত রাস্তা উঁচু করণসহ কার্পেটিংয়ের কাজ যেভাবে ঢিমেতালে চলছে তাতে করে বর্ষা মৌসুমের আগে কাজ সম্পন্ন করা খুবই দুরুহ ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে। 

বিগত দিনের ন্যায় বর্ষার আগ মুহূর্তে বা বর্ষার মধ্যে কাজ করা শুধু শুধু সরকারের অর্থ অপচয় ছাড়া আর কিছুই না বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন স্থানীয় মহল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-পাইকগাছা সড়কের তালা ব্রীজ এলাকা থেকে কপিলমুনির গোলাবাড়ি পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে (প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে রাস্তার যে অংশটুকু পানিতে নিমজ্জিত থাকে) সাড়ে ৬ কিলোমিটার রাস্তা ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে উঁচু করণসহ কার্পেটিংয়ের কাজ চলতি মাসে শুরু হয়েছে। বর্তমানে উক্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার রাস্তার দু’পাশে দু’থেকে চার ফুট মাটি ফেলে উঁচুকরণ কাজ চলছে। রাস্তা উঁচুকরণ সম্পন্নের পর কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হবে।

সূত্র মতে, রাস্তা উঁচুকরণ কাজ শেষের আগেই বর্ষা মৌসুম শুরু হবে এবং বর্ষা মৌসুম শেষ হলেই কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করা হবে। সেক্ষেত্রে বর্ষার মধ্যে রাস্তাটির হাল ফের পূর্বাবস্থায় ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে আঠারমাইল থেকে পাইকগাছা পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে মাত্র সাড়ে ৬ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শুরু হলেও বাকি সাড়ে ২৬ কিলোমিটার রাস্তাও ভেঙেচুরে যান চলাচল অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। উক্ত সাড়ে ২৬ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ এখনও কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।

জানা যায়, প্রচন্ড বৃষ্টিপাত ও কপোতাক্ষ নদের পানি বৃদ্ধির কারণে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট অত্র সড়কের তালা ব্রীজ এলাকা থেকে কপিলমুনির কাশিমনগর পর্যন্ত রাস্তা ৫/৭ ফুট পানিতে নিমজ্জিত হয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মাসের পর মাস বন্ধ থাকে যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল। সেই থেকে অদ্যবধি অত্র সড়কটি নির্বিঘ্নে চলাচলের যোগ্য হয়ে ওঠেনি।

২০১৩ সালে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে আঠারমাইল থেকে কপিলমুনির গোলাবাড়ি পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার রাস্তার রিপিয়ার সীলকোটের কাজ হলেও স্রেফ জোড়াতালি ও বর্ষার মধ্যে করায় তা মাত্র ৬ মাসও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ভেঙ্গে ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

সড়কটির কপিলমুনির শ্রীরামপুর নামক স্থানে সরেজমিনে গেলে সাংবাদিকদের দেখে পথচারী কেষ্ট পদ দত্ত বলেন, প্রতি বছর সংস্কারের নামে সড়কের উপর কিছু খোয়া ও পিচ ছাড়া কিছুই জোটে না। প্রতিবার সংস্কার কাজ পুকুর চুরি করে যেনতেন ভাবে সারা হয়। ফলে কিছুদিন পরেই সড়কে পূর্বের অবস্থা বিরাজ করে।

পথযাত্রী কৃষি উদ্ভাবক এম. আজিজুর রহমান বলেন, সরকারি টাকায় কাজ হয় তাই কি এত অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতা ? সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সংস্কার কাজ শেষ করতে হলে চাই সংম্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের তদারকি।

এদিকে পাইকগাছা-কয়রা সড়কের শিববাটী ব্রীজের উত্তর-পূর্ব পাড়ের সংযোগ সড়কের পৌনে দু’কিলোমিটার একেবারে ভাঙাচুরা রাস্তায় সম্প্রতি সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এখানেও রিপিয়ার সীলকোটের কাজ হওয়ায় এর স্থায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে অত্র বাইপাস সড়কটিও ফের ভেঙ্গে যাবার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

খুলনা-পাইকগাছা সড়কের সাড়ে ৬ কিলোমিটার রাস্তার কাজ দ্রুত গতিতে করা ও শিববাটী ব্রীজ সংযোগ সড়কের রিপিয়ার সীলকোটের পরিবর্তে কার্পেটিং করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।