Monday, April 13, 2015

কয়রায় কাবিখা প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকল্প অনুমোদনের আগেই বাস্তবায়ন দেখিয়ে খাদ্যশস্য লোপাট


কয়রা উপজেলায় কাবিখা প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক আগে করা মাটির কাজ চলতি প্রকল্পে অনুমোদন নিয়ে তাতে বরাদ্দ ছাড় করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ বরাদ্দ আত্মসাতের কৌশল হিসেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটি করেছেন। 


উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-খাদ্যশস্য) কর্মসূচির আওতায় কয়রা উপজেলা কমিটির প্রস্তাবকৃত ৩৫টি প্রকল্প ১৫ জানুয়ারি জেলা কমিটির সভায় অনুমোদন পায়। এসব প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ৩৭৯ মেট্রিক টন খাদ্যশস্যের অর্ধেক এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অথবা বাড়িতে সোলার প্যানেল স্থাপন এবং অর্ধেক বরাদ্দ রাস্তা সংস্কারে ব্যয় করার কথা। এর মধ্যে তিনটি প্রকল্প অনুমোদনের আগেই বাস্তবায়ন করা হয়েছে দাবি করে সেখানে ৩৩ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য ছাড় করা হয়েছে। 

অভিযোগ পাওয়া গেছে, উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ও মহারাজপুর ইউনিয়নে কয়েক মাস আগে কাজ করা তিনটি রাস্তায় বরাদ্দ ছাড় করা হয়েছে। এর মধ্যে মহারাজপুর ইউনিয়নের ‘লোকা ইউনুস গাজীর বাড়ি হতে বেলায়েত হাওলাদারের বাড়ি অভিমুখে মাটির রাস্তা সংস্কার’ প্রকল্পটি পাঁচ মাস আগে মাটির কাজ শেষ হয়েছে। অথচ এখানে বরাদ্দ হয়েছে আট মেট্রিক টন খাদ্যশস্য। দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের মোট চারটি প্রকল্পের মধ্যে ২৫ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দের দুটি প্রকল্পের কাজও কয়েক মাস আগে শেষ হলেও তা বর্তমান প্রকল্পের তালিকায় অনুমোদন পেয়েছে। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কয়েক মাস আগে দায়সারা গোছের কাজ দেখিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাদ্দের অধিকাংশ খাদ্যশস্য আত্মসাৎ করেছিল। 

মহারাজপুর ইউনিয়নের এমন একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য আঃ সামাদ মোল্লা বলেন, ‘পিআইও’র নির্দেশ মত প্রকল্প অনুমোদনের আগে মাটির কাজ শেষ করা হয়েছে।’ 

দক্ষিণ বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান আঃ মান্নান অনুমোদনের আগে প্রকল্পের কাজ সমাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘হাতের কাছে সব সময় মাটি পাওয়া যায় না এ জন্য সুবিধামত সময়ে মাটির কাজ শেষ করা হয়েছে।’ 

কয়রা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) প্রশান্ত কুমার বলেন, ‘এলাকাটি লোনাপানি অধ্যুষিত হওয়ায় সব সময় মাটি পাওয়া যায় না। তাই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে এমন একটু-আধটু অনিয়ম করতেই হয়।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শামীম হাসান এ প্রসঙ্গে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কমিটির অনুমোদনের পর প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা। অনুমোদনের আগে কোন প্রকল্পের কাজ করা হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।