অস্বচ্ছতা ও
অনিয়মের অভিযোগে খুলনার কয়রা উপজেলায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা)
প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্যের ছাড়পত্র (ডিও লেটার) আটকে দেওয়া
হয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি পরস্পরবিরোধী মন্তব্য
করেছেন। তবে কাজের মান সন্তোষজনক না হলে বরাদ্দ ছাড় করা হবে না বলে স্পষ্ট
জানিয়ে দিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি আ.খ.ম তমিজ উদ্দীন জানান,
প্রকল্পের কাজ সন্তোষজনক না হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর
অভিযোগ, প্রকল্পগুলি পরিদর্শনে গিয়ে বরাদ্দের সঙ্গে কাজের যথেষ্ট অমিল
পাওয়া গেছে। প্রকল্পের সভাপতিরা শ্রমিকদের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে কাজ করিয়ে
নিয়েছেন। তাতে বরাদ্দের তিনের এক অংশও ব্যয় করা হয়নি। তাছাড়া প্রকল্পের
কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সাইনবোর্ড টানানোর কথা থাকলেও কোন প্রকল্প এলাকায়
তা দেখা যায়নি। এতে বরাদ্দের বেশিরভাগ খাদ্যশস্য আত্মসাৎ করার সুযোগ তৈরি
হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার জানিয়েছেন,
অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলেও কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বরাদ্দ
ছাড়ে বিলম্ব হচ্ছে। মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করা হয়েছে। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান
কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘উনি যদি বুঝে থাকেন
কাজে অনিয়ম হয়েছে, তাহলে সে মতই তিনি ব্যবস্থা নেবেন, এতে আমার করণীয় কিছু
নেই।’’
প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতিদের দাবি, নির্দিষ্ট
সময়সীমা শেষ হওয়ার অনেক আগে অফিসের দেওয়া নক্সা ও পরিমাপ ঠিক রেখে
প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রকল্পের লাভ-লোকসান হিসেব করে
বরাদ্দ আটকে রেখে তাদের সঙ্গে খামখেয়ালিপনা করা হচ্ছে।
সদর
ইউনিয়নের একটি প্রকল্পের সভাপতি ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, ‘‘উপজেলা
চেয়ারম্যান প্রকল্প এলাকার শ্রমিকদের কাছে জেনে বরাদ্দ আটকে দিয়েছেন। আমি
শ্রমিকদের কত টাকা দিলাম সে প্রশ্ন নয়, প্রকল্পের কাজ শতভাগ সঠিক করেছি
কিনা সেটা যাচাই না করে বরাদ্দ আটকে রাখা ঠিক হবে না।’’
উপজেলা
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-২০১৫ অর্থ
বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-খাদ্যশস্য) কর্মসূচির আওতায় উপজেলার
সাতটি ইউনিয়নে ৩৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শেষ হয়েছে। এসব প্রকল্পের
অনুকূলে উপ-বরাদ্দকৃত ৩৭৯ মেট্রিক টন খাদ্যশস্যের মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০
শতাংশ বরাদ্দ ছাড় পেয়েছে।